নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায়

সুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত, নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় আমাদের জানা জরুরি। দৈনন্দিন জীবনের চলার পথকে সহজ করতে মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরী। আমরা অনেকেই আমাদের ব্যস্ততম জীবনে সুস্থ থাকার সহজ উপায় খুঁজে থাকি। এই পোস্টে এর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায়
নিজেকে মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে খেয়াল রাখতে হবে কিছু বিষয়। নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় জানতে নিচের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন ।

ভূমিকা

নিজেকে সুস্থ রাখার গোপন চাবিকাঠি হল সঠিক লাইফ স্টাইল ঠিক করা। সঠিক লাইফ স্টাইল ঠিক করতে গেলে নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় খুব ভালোভাবে মেনে চলতে হবে যেমন ব্যায়াম, সঠিক খাবার, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান,মেডিটেশন,নিয়মিত ডাক্তার দেখানো,ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা,ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা। 

এছাড়াও রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো,অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখা,তামাক জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখা,স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া,নিজের দাঁতের প্রতি যত্নবান হওয়া, মাঝেমধ্যে বাইরে ঘুরতে যাওয়া, প্রিয়জনদের সাথে দেখা করা এবং সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া জরুরী। এসব বিষয় সঠিকভাবে মেনে চললে আশা করা যায় একটি মানুষ মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন।

ব্যায়াম এর মাধ্যমে সুস্থতা

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে ব্যায়াম বা শরীর চর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ব্যায়াম আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, রক্তচাপ স্বাভাবিক করে,কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। ব্যায়াম বিভিন্নভাবে হতে পারে যেমন সকাল বেলা খোলা মাঠে জগিং করা, লাফ দড়ি খেলা,ফুটবল খেলা, ক্রিকেট খেলা অথবা জিম করা। 

আমাদের এই ব্যস্ততম লাইফে নিজেকে সুস্থ রাখতে দিনে কমপক্ষে এক ঘন্টা যেকোনো একপ্রকার ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম আমাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অনেক সময় একঘেয়েমি কাজ করতে করতে কাজের প্রতি বিরক্ত চলে আসে। এর থেকে রক্ষা পেতে এবং আবার পুনরায় কাজে উদ্যমতা ফিরে পেতে প্রতিদিন এক ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে। 

এতে যেমন কাজের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি পায় তেমনি কাজের ফলাফল অনেক ভালো আসে। নিজে ব্যায়াম করার পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কেউ ব্যায়াম করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা ব্যায়াম করাকে একটি অলৌকিক ঔষধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কেননা ব্যায়াম আপনার মানসিক উদ্যোগ এবং বিষন্নতা কমাতে খুবই সাহায্য করে।

সঠিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থতা

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপ সঠিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থতা। সুস্থ থাকতে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না এর পাশাপাশি সঠিক এবং মানসম্মত খাবার গ্রহণ করা খুবই জরুরী। শরীরে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের বিকল্প নেই। খাবারের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি থাকতে হবে শাকসবজি। 

শাকসবজি খাবার অভ্যাস আমাদের ফুসফুস, কোলন, স্তন, জরায়ু,পাকস্থলী, খাদ্যনালী, মূত্রাশয়, অগ্ন্যাশয় এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সঠিক খাবার গ্রহণ আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরকে হালকা রাখে। শুধু শাক-সবজি খেলেই হবে না আমাদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মাছ, মুরগি এবং মাংস আমাদের খাবারের তালিকায় অবশ্যই থাকতে হবে।


ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন আমাদের ফল খেতে হবে। ফলের মধ্যে আমরা খেতে পারি আপেল,কমলা, বেদানা,আঙ্গুর,পেয়ারা,কলা,পেঁপে,খেজুর,নাশপাতি, ইত্যাদি।এছাড়াও শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি জোগাতে আমাদের খেতে হবে কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম,আখরোট এবং দুধ।

সকালে খাবারের নিয়ম

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ রাতে ঘুমায় প্রায় আট ঘন্টা। এই আট ঘন্টা আমরা কোন কিছু না খেয়ে থাকি। তাই এর পরবর্তী সময় আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করার দরকার হয়। সকালের খাবার অবশ্যই দশটার মধ্যে করে ফেলতে হবে এবং সকালে খাবারের মধ্যে আমরা রাখতে পারি রুটি সবজি অথবা খিচুড়ি এর সাথে কাঠবাদাম কাজুবাদাম আখরোট এবং দুধ। মনে রাখতে হবে সকাল বেলায় ভরপেট খাবার খাওয়া জরুরী।

দুপুরের খাবারের নিয়ম

দুপুরের খাবার সকালের খাবারের থেকে তুলনামূলক একটু কম খেতে হবে। যেমন এক প্লেট ভাত, মাছ বা মাংস,সবজি এবং ডাল। কখনোই দুপুরে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত খাবার খেলে ঘুম আসে এবং এই সময় ঘুমলে শরীরে মেদ বাড়ে এবং কার্যক্ষমতা হ্রাস করে।

রাতে খাবার নিয়ম

রাতে আমাদের হজম প্রক্রিয়া তুলনামূলক দুর্বল থাকে তাই এই সময় আমাদের অতিরিক্ত ভারী খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়। রাতের খাবার অবশ্যই ৯ টার মধ্যে সেরে ফেলতে হবে। রাতের খাবার হতে পারে দুইটা রুটি এবং সবজি অথবা হাফ প্লেট ভাত তার সাথে তরকারি। রাতে খাবার পর অবশ্যই কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে হবে যাতে খাবার হজম হয়।খাবারের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন খাবার বাসার খাবার হয়। বাইরের খাবার আমাদের যত সম্ভব না খাওয়াই ভালো।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে তৃতীয় ধাপ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান। শরীরকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরী। একজন সুস্থ মানুষকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ লিটার বা ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত। 

পানি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পেশীতে শক্তি যোগায়,শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে,জল ডিটক্সিফাই করে, হজমে সাহায্য করে এবং কেমোথেরাপির ফলাফলে সাহায্য করে। আমাদের শরিরে প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি পুরন হয় খাবার থেকে আর বাকিটা পুরন হয় পানি পান করার মাধ্যমে। 

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান আরও কিছু সুবিধা আছে যেমন, হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক কমায়, ত্বক ভালো রাখে, মেটাবলিজম বাড়ায়, শরীর থেকে টক্সিক জাতীয় পদার্থ বের করে দেয় ইত্যাদি।

অশ্বগন্ধার নিয়মিত সেবন

আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রাচীনকাল থেকে অশ্বগন্ধা গাছের ফুল, পাতা, শিকড় ও বীজ এর ভূমিকা অনেক। এগুলো আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আমাদের মানবদেহে অশ্বগন্ধার উপকারিতা তুলে ধরা হল,
  • অশ্বগন্ধার মধ্যে উপস্থিত এনজাইলটিক নামক উপাদান মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধার মূলে উপস্থিত ফ্ল্যাবোনয়েডস নামক উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধা শরীরে প্রোজেস্টেরন ও টেস্টোষ্টেরণের পরিমাণ ছেলেদের যৌন মিলনের ইচ্ছা ও যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও অশ্বগন্ধা স্ট্রেস কমানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে, থাইরয়েড সমস্যার সমাধানে, ইনফেকশন সারাতে, রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণে, চুলের যত্নে, ত্বকের যত্নে প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করে। 

তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে অশ্বগন্ধার নিয়মিত সেবন আপনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হয়ে দাঁড়াবে।  

মেডিটেশন এর মাধ্যমে সুস্থতা

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে চতুর্থ ধাপ মেডিটেশন এর মাধ্যমে সুস্থতা। মস্তিষ্ককে শিথিল এবং দেহ ও মনকে সতেজ করার আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া হল মেডিটেশন। এর একটি সুদূরপ্রসারী এবং দীর্ঘস্থায়ী উপকারিতা রয়েছে। মেডিটেশন আমাদের দেহ ও মনকে সতেজ করার মাধ্যমে টেনশন থেকে দূরে রাখে। আমাদের জীবনে টেনশণের খারাপ প্রভাব অনেক। আমাদের মনের এবং দেহের ৭৫ ভাগ রোগের কারনই হচ্ছে টেনশন। 

মনোদৈহিক রোগ গুলো যেমন মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিস,আইবিএস,ডায়াবেটিস, ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে বা শরীরের যেকোনো স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, হজমের সমস্যা, এসিডিটি, হৃদরোগ,অনিদ্রা প্রভৃতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মেডিটেশন এর মাধ্যমে লেখাপড়া ও কাজে মনোযোগ বাড়ে। প্রশান্ত মন, সুস্থ জীবন ও কর্মব্যস্ত সুখী জীবন এবং ইবাদত উপাসনায় একাগ্রতা বৃদ্ধির জন্য মেডিটেশন একটি কার্যকরী উপায়।

নিয়মিত ডাক্তার দেখানো

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে পঞ্চম ধাপ নিয়মিত ডাক্তার দেখানো। আপনি সুস্থতাবোধ করলেও আসলেও আপনি সুস্থ কিনা এটা বোঝার জন্য নিয়মিত ডাক্তার দেখানো উচিত । ছোট খাট অসুস্থতা অবহেলা করা মটেও উচিত না। 

দেরি না করে ডাক্তার দেখান। আপনার শরিরে কোন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি আছে কিনা চেক করান। কোন রোগবালাই আছে কিনা খুঁজে বের করুন। মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায় এর মধ্যে ষষ্ঠ ধাপ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা বলতে বোঝাই আপনার উচ্চতা অনুজাই আপনার ওজন যতটুকু থাকা দরকার সেটা আছে কিনা। ওজন জানার একটি উপায় হল বডি মাস ইনডেক্স (body mass index) পদ্ধতি। আপনার ওজন কতটুকু হলে ভাল সেটা জানার জন্য একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। 
যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য পরামর্শ হল,
  • কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া।
  • পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম।
  • আমিষ জাতীয় খাবার গ্রহণ করা।
আর যারা ওজন কমাতে চান তারা,
  • প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খাবেন।
  • গাঢ়যুক্ত কোমল পানীয় ও ফলের রস ত্যাগ করুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • রিফাইন্ড সুগার ও কার্বোহাইড্রেট খান।

ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা

শরীরকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা একদিনে সম্ভব না। তাই ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন শারীরিক এবং মানুষিক সুস্থতা অর্জনের লক্ষে। হতে পারে প্রথমে খাবারের নিয়ম মেনে চলুন,তারপর সঠিক সময়ে ঘুমান হচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল রাখা,এরপর ব্যায়াম এর দিকে খেয়াল রাখা ইত্যাদি।

রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

শরীরকে সচল রাখতে যেমন ব্যায়াম প্রয়োজন তেমনি শরীরকে বিশ্রাম দিতে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।একটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ঘুমের প্রয়োজন ৮-১০ ঘণ্টা।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর কিছু উপকারিতা,
  • আবেগগত সমস্যা দূর করে।
  • স্মৃতিশক্তি ভালো করে।
  • আয়ু বাড়ায়।
  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • সৃজনশীলতা বাড়ায়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে।
  • মানসিক চাপ কমায়।
  • ভালো অনুভূতি দেয়।

অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখা

অ্যালকোহল আমাদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। এটি আমাদের শরীরে টক্সিনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের গতির স্বাভাবিকতা নষ্ট করে দেয়। মস্তিষ্ক এবং লিভারের এটি বিপাক করার চেষ্টা করে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য, শরীরের ওজন, ঘুমের ওপরও প্রভাব ফেলে। শরীরে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করে অ্যালকোহল। এসব ক্ষতির কথা বিবেচনা করে আমাদের অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে।

মাঝেমধ্যে বাইরে ঘুরতে যাওয়া

মনকে ভাল রাখার একটি ভাল উপায় মাঝে মাঝে বাইরে ঘুরতে যাওয়া। এতে মন ভাল থাকে যার ফলে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে কারন আমারা জানি শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক। বাচ্চাদের বা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে পার্কে বা সুন্দর কোন যায়গায় বেড়াতে যান। মাঝে মাঝে একা ঘুরতে যাওয়া উচিত।  

একা ঘুরতে গেলে স্বাধীনভাবে একটু সময় কাটানো যায়, অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠা যায়, সব কাজেকর্মে নতুন করে উৎসাহ ফিরে আসে, বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতির পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। কিছু যায়গা আমরা বছরে একবার হলেও ঘুরে আস্তে পারি যেমন, বান্দরবান, সিলেট, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, কাপ্তাই লেক, সেইন্টমারটিন ইত্যাদি।

তামাক জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখা

আমাদের সমাজে এখন ধূমপান খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। ধূমপান আমাদের শরীরের জন্য খারাপ। প্রথমে আমাদের এ ধূমপান খাওয়ার প্রবণতা ত্যাগ করতে হবে। এর জন্য দরকার হলে আমরা কাউন্সিলিংয়ের সাহায্য নিতে পারি।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের বিকল্প নাই। আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম করে ফল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত। আমাদের প্রতিদিনর খাবারে চিনির পরিমাণ খাদ্যশক্তির শতকরা ১০ ভাগের নিচে রাখার চেষ্টা করতে হবে। দেহ যতটুকু ক্যালরি খরচ করবে, ঠিক ততটুকু বা তার কাছাকাছি সংখ্যক ক্যালরির খাদ্য গ্রহণ করে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে। 

আমাদের খেয়াল রাখতে হবে খাবারের সমস্ত উৎস থেকে লবণ কিংবা সোডিয়াম গ্রহণ সীমিত হচ্ছে কিনা আর লবণ সঠিক আয়োডিনযুক্ত কি না। মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে এমন জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত খাবার পরিহার করতে হবে। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের সাতে সম্পৃক্ত স্নেহ পদার্থগুলোর পরিবর্তে বহু-অসম্পৃক্ত স্নেহ জাতিয় পদার্থ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে, এ পদ্ধতি হৃদধমনী রোগ ও মধুমেহ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

নিজের দাঁতের প্রতি যত্নবান হওয়া

সুধু শরীর ও মনের স্বাস্থ্য ঠিক রাখলেই হবে না, মুখের স্বাস্থ্যও অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। মুখকে অবহেলা করলে দাঁতের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে তার সাথে মাড়ির রোগ যেমন প্রদাহ এবং প্লাক তৈরিও হতে পারে। আমাদের দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যালজাইমার, ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের এবং অস্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার ঝুঁকি কমায়। 

যারা বেশি ধূমপান করেন, তাদের নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করানো উচিত। তামাক সেবন শুধু আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতি নয়, আমাদের দাঁত ও মাড়ির জন্যও খুব বিপদজনক।    

প্রিয়জনদের সাথে দেখা করা

প্রত্যেকটি মানুষের কেওনা কেও প্রিয়জন আছে। তারা আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। আমাদের ভালোমন্দ সবকিছু তাদের কাছে বলতে পারি। দুঃখের সময় তাদের সাথে মনের কথা বলে মনকে হালকা করতে পারি এতে অনেকটা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে পারি। তাদের অনেক ভাল কথা আমাদের জীবন বদলে দিতে সাহায্য করে। তাই যখনই সময় পাব প্রিয়জনদের সাথে দেখা করব।

সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া

আমাদের সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতাবোধ থাকতে হবে। আমরা যদি সবসময় বেশি চাওয়া পাওয়ার আশায় থাকি তাহলে কখনই সুখী হতে পারবনা। সবসময়ই মাথায় রাখতে হবে আল্লাহ আমাদের যা দিয়েছেন যেমন রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যেতে হবে এবং সহজ সরল অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

সবশেষে বলতে পারি এই জীবনটা আল্লাহর দান। এই জীবনে সুখী থাকতে শারীরিক এবং মানুষিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোণ অবহেলা করা যাবেনা। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হবে, নিজেকে পুরোপুরি ইসলামের নিয়মনীতি অনুসারে চালানোর অভ্যাস করে তুলতে হবে এবং উপরোক্ত ১৫ টি বিষয় মেনে চলতে হবে। 

আশা করি এভাবে জীবনকে চালালে জীবনটা সুন্দর হয়ে যাবে। এই পোষ্টটি আপনাদের ভাল লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই পেইজটির সাথে থাকুন। আরও জানতে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url