ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা

সাম্প্রতিক বছরে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এ তীব্রতা অনুভূত হয় এতে জনসাধারণের মনে তীব্র আতংকের সৃষ্টি হয়। এই পোস্টে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা
ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা সম্পর্কে আমাদের জানা খুব জরুরি। এছাড়াও জনজীবনে ভূমিকম্পের প্রভাব অনেক। এই পোস্টে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আছে চলুন পোস্টটি পরে নেওয়া যাক।

ভুমিকাঃ

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ভূমিকম্প একটি আতংকের নাম। আমরা গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কয়েকবার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হয়েছি। এ ভূমিকম্পের কারন এবং এর তীব্রতা সম্পর্কে আমাদের জানা জরুরি। এই পোস্টে বাংলাদেশে ভূমিকম্প, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের ইতিহাস, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা, ভূমিকম্পে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ক্ষতি, ভূমিকম্পে করনীয় কি এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।

ভূমিকম্প কি ?

ভূমির কম্পনকে বলা হয় ভূমিকম্প। আমরা ভূমিকম্প অনুভূত করি যখন ভূ-অভ্যন্তরে একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে। আরেকভাবে আমরা বলতে পারি পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশবিশেষের হঠাৎ অবস্থানের যখন পরিবর্তন হয় তখনই ভূমিকম্প হয়। গবেষকদের মতে বিশ্বে বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পের কারণ এবং প্রকারভেদ 

মাদের ভূপৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেটের সমন্বয় গঠিত এবং একটি প্লেট থেকে আরেকটি প্লেটে থাকে ফল্ট বা ফাটল। প্রত্যেকটি প্লেট এক একটি থেকে আলাদা। ভূ-অভ্যন্তরে যত গলিত পদার্থ এই প্লেটগুলোর নিচে থাকে। এই গলিত পদার্থ গুলোর স্থান পরিবর্তন হলে প্লেটগুলোর কিছুটা স্থান পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তখন এই প্লেট গুলোর কোন অংশ অন্য প্লেটের তলায় ঢুকে যায় যার ফলে ভূমিতে কম্পন অনুভূত হয় আর তখনই এই কম্পন টা আমাদের কাছে ভূমিকম্প রুপে আবির্ভূত হয়।

ভূমিকম্প তিন ধরনের হয় মৃদু, মাঝারি এবং প্রচন্ড। বিশেষজ্ঞদের মতে বছরে গড়ে ছয় হাজার এর মতো ভূমিকম্প অনুভূত হয় যার বেশিরভাগই মৃদু ফলে আমরা সেই ভূমিকম্প গুলো টের পায় না।

বাংলাদেশে ভূমিকম্প 

সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে কয়েক দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা নিয়ে বলতে গেলে ২০২৩ সাল এর মে মাস থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন থেকে চার বার ছোট থেকে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে এবং এগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের সীমানার ভেতরে অথবা আশেপাশে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মত বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণ মূলত বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পর মুখী গতি। 

আরো চিন্তার বিষয় এই দুইটা প্লেটের সংযোগস্থলে প্রচুর শক্তি জমা হয়ে আছে যেগুলো বের হয়ে আসার পথ খুঁজছে আর সেই কারণে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। এই বিষয়ে আরো বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ হুমায়ুন আখতার। তিনি বলেছেন দুদিন আগে বা পরে এই শক্তি বেরিয়ে আসবেই আর সেই জন্যই এই ছোট ছোট ভূমিকম্প গুলো আমাদের জানান দিচ্ছে। 


ভূতত্ত্ববিদদের মতে বাংলাদেশের দুটো টেকটনিক প্লেট রয়েছে একটি বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় ইন্ডিয়ান প্লেট এবং আরেকটি বার্মা প্লেট। এই দুটো প্লেটের মধ্যে ইন্ডিয়ান প্লেটটি উত্তর-পূর্ব দিকে এবং বার্মা প্লেটটি পশ্চিম দিকে যাচ্ছে যার ফলশ্রুতি পরস্পরমুখী সংঘর্ষ হচ্ছে। এই ইন্ডিয়ান প্লেট এবং বার্মা পেটের সংযোগস্থল বেশ গভীর। 

বাংলাদেশের যেসব এলাকায় ভূমিকম্প হচ্ছে বিশেষ করে সিলেট এলাকায় সেটা হল স্যালো ডেপথ মানে কম গভীর।বাংলাদেশে ২০২৩ সালের ১৪ই আগস্ট রাত ৮ঃ৪৯ মিনিটে একটা ভূমিকম্প অনুভূত হয় রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.৫ এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের সিলেটের কানাই ঘাট এলাকা এবং এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।

এর আগেও ২০২৩ সালের ১৬ই জুন রাজধানীসহ সারাদেশে ৪ দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয় এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোপালগঞ্জ। এছাড়াও ২০২৩ সালের মে মাসের ৫ তারিখে আর একটা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় । এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৩ যা যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এর হিসাব অনুযায়ী এবং এর উৎপত্তিস্থলটা ছিল ঢাকার কাছে বিক্রমপুরের দোহার থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে এবং এর গভীরতাও ছিল ১০ কিলোমিটার।

বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের ইতিহাস 

ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে চলে আসবে প্রথম ভূমিকম্প ১৫৪৮ সালে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অনুভূত হয়। এর ফলে বর্তমানের চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে জায়গার মাটি ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গিয়েছিল এবং প্রচুর দুর্গন্ধযুক্ত কাদাপানি বের বের হওয়ার তথ্য পাওয়া যায় তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় ১৭৬২ সালের এপ্রিল মাসে। 

এই ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম জেলার অনেক জায়গায় মাটি ফেটে প্রচুর পরিমাণে কাদা পানি ছিটকে বের হয়ে যায় যা ১৯০৮ সালে ‘ইস্টার্ন বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গ্যাজেটিয়ার চিটাগাং’ এর তথ্য অনুযায়ী পাওয়া যায়। এখানে আরো পাওয়া যায় 'পর্দাবন' নামক জায়গায় একটা বড় নদী শুকিয়ে যায়। আরো একটি বড় ভূমিকম্প যার নাম ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক’ এই ভূমিকম্পটি সংঘটিত হয় ১৮৯৭ সালের ১২ জুন। 

এটা একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ধারণা করা হয় ৮। এ ভূমিকম্পে শুধু সিলেট জেলাতেই মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৪৫ জন এবং এই ভূমিকম্পের ফলে ঢাকা ময়মনসিংহ রেল সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।এছাড়া রাজশাহী সহ পূর্বাঞ্চলে অন্যান্য জেলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধারণা করা হয় সেই সময় অর্থ সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৫০ লাখ টাকার মত।

১৬৪২ সালে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প সিলেটে আঘাত হানে তাতে অনেক দালান কোঠার ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ১৯১২ সালে ‘ইস্টার্ন বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গ্যাজেটিয়ার চিটাগাং’ তথ্য অনুযায়ী ১৮৬৫ সালে শীতকালে আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের বর্ণনা পাওয়া যায়।এই ভূমিকম্পে সীতাকুন্ডের একটা পাহাড় ফেটে বালি আর কাঁদা বের হয়ে যায় তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই ভূমিকম্পেও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

১৮৮৫ সালে মানিকগঞ্জে আঘাত আনে সাত মাত্রার ভূমিকম্প যা 'বেঙ্গল আর্থকোয়েক' নামে পরিচিত এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার ১৭০ কিলোমিটার দূরবর্তী সাটুরিয়ার কোদালিয়া ধারণা করা হয় এ ভূমিকম্পের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ভারতের সিকিম, মনিপুর, বিহার ও মিয়ানমারেও এর কম্পন অনুভূত হয়েছিল এবং এই ভূমিকম্পে ঢাকা সহ ময়মনসিংহ, শেরপু্‌র, পাবনা, সিরাজগঞ্জের অনেক দালান কোঠা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তবে গুরুতর কোন ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও ১৯১৮ সালে ভূমিকম্প অনুভূত হয় ৭.৬ মাত্রা এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে এবং বাংলাদেশের সিলেটে। ১৯৫০ সালে ১৫ আগস্ট আসামে ভূমিকম্প অনুভূত হয় এর মাত্রা ছিল ৮.৭। বাংলাদেশেও নানা অঞ্চলে এটি অনুভূত হয় কিন্তু হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ১৯৯৭ সালে ২২ নভেম্বরে চট্টগ্রামে ছয় মাত্রার ভূমিকম্প হয় এবং ১৯৯৯ সালে জুলাই মাসে ৫.২ ভূমিকম্প হয়।

ঢাকা-সহ বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা 

ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা গত ১২ বছরে আটটা অনুভূত হয়েছে এবং এগুলোর বেশিরভাগই কেন্দ্রস্থল ছিল সিলেট ও চট্টগ্রাম এলাকা। ২০২৩ সালে দুটো ভূমিকম্পের ধরন ২১১ বছর আগে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের সাথে একটা মিল পাওয়া গেছে। ১৮১২ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের মাঝামাঝি ঢাকার আশপাশে পরপর দুইটা ভূমিকম্প আঘাত এনেছিল। 

তবে এই ভূমিকম্পের মাত্রা কত ছিল তা সঠিকভাবে জানা যায়নি কিন্তু ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ঢাকা শহরে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে। ২০২৩ সালের ৮ই মে ভোর পাঁচটা সাতান্ন মিনিটে ঢাকা সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৪.৩ এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিণে। 

এই ভূমিকম্পের ভূপৃষ্ঠ থেকে গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে চার মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয় ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল। এই ভূমিকম্প নগরবাসীদের অনুভূত হয়নি কারণ এর গভীরতা ভূগর্ভে প্রায় ১৭ কিলোমিটার নিচে হওয়ায়। কারণ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল যত গভীর হবে কম্পনের অনুভূতিও তত কম হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ভূমিকম্প বিষয়ক একটা জরিপে বলা হয়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ভেতরে গত ৪৮৫ বছরে ও ২০০ কিলোমিটার এর মধ্যে ৫২ টি মৃদু, মাঝারি ও তীব্র মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে যার মধ্যে ঢাকা ও আশপাশে ভূমিকম্প হয়েছে মাত্র ছয়টি এসব ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ময়মনসিংহ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও দোহার। 

এছাড়া বেশিরভাগ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সিলেট ও চট্টগ্রাম এলাকায়।২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় সংগঠিত হয়েছে ছয়টি ভূমিকম্প। এছাড়া পরের বছরগুলোতে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মূলত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট এলাকার মধ্যে কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকার আশপাশে বেশি অনুভূত হচ্ছে। 

এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে বাংলাদেশের ভিতরে ভূ-অভ্যন্তরের বার্মা প্লেট ইন্ডিয়ান প্লেটের উপর চাপা পড়ে যাচ্ছে এর ফলশ্রুতিতে প্রচুর শক্তি জমা হচ্ছে, এই শক্তি একসময় বেরিয়ে আসবে যার ফলশ্রুতিতে বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হবে।

ভূমিকম্পে বাংলাদেশের সম্ভাভ্য ক্ষতি 


বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ এটা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ ভবন তৈরি হচ্ছে কোন নিয়ম না মেনে ফলে ঝুঁকি বাড়ছে ভবন ধসের। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে ২০২০ সালের তাদের এক গবেষণায় বলেছে বাংলাদেশের ভবন তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয় না। 

ভবনের নকশা অনুমোদন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয় না। বাংলাদেশের ভূতত্ত্ববিদ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা ধারণা করছেন বাংলাদেশে যদি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় তাহলে এর ক্ষয়ক্ষতির বা প্রাণহানির পরিমাণ তুরস্কতে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প ট্রাজেডি থেকে বেশি হতে পারে আর এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য সবচেয়ে বড় দায়ী হবে অপরিকল্পিতভাবে ভবন তৈরি। 

২০০৯ সালে সিডিএমপি ও জাইকার যৌথ জড়িত বলা হয়েছে ঢাকাতে সাত বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে প্রায় ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়তে পারে এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে লাখ লাখ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রায় 35 হাজার ভবন। তৈরি হবে সাত কোটি টন কংক্রিটের একটা স্তূপ।

ভূমিকম্পে করনীয় 

ভূমিকম্পের আসন্ন ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে এখন থেকে আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে। বাংলাদেশে ভূমিকম্পের জন্য তেমন কোন প্রস্তুতি না থাকলেও বাংলাদেশ সরকার উদ্ধার কাজের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে তৈরি রেখেছেন এবং আরো ৩৬ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা আছে তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। দায়িত্ব দেওয়া আছে সামরিক বাহিনীগুলোকেও।

ভূমিকম্প রোধে প্রধান করণীয় ঝূঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা এবং তা ভেঙে ফেলা। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরি করা।প্রত্যেকটি বিল্ডিংয়ের মাঝে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখা।ভূমিকম্প হলে স্মার্টফোনের মাধ্যমে মানুষের কাছে ভূমিকম্পের সর্তকতা পৌঁছে দেওয়া। ভূমিকম্প বিষয়ক গেম তৈরি করা যার মাধ্যমে তরুণরা ভূমিকম্পের সময়ে পদক্ষেপ সমূহ শিখতে পারে।

ভূমিকম্প নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং করণীয় সমূহ সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া। এইভাবে আমরা ভূমিকম্পের সময় সংঘটিত ক্ষতি অনেক অংশে রোধ করতে পারব।

লেখকের মন্তব্য

আজকের এই পোস্টটিতে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প এবং এর তীব্রতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই পোস্টটিতে পাঠকদের ভূমিকম্পের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। আপনার এই পোস্টটি পরে ভাল লেগে থাকলে আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন এবং নিত্য নতুন আরও তথ্য পেতে পেজটি ফলো করে সাথে থাকুন। আরও জানতে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url