ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি আম ব্যবসায়ীদের জন্য একটা সুখবর। এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই আমাদের দেশীয় আম বিদেশে রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে। এর সম্পর্কে বিস্তারিত এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।
ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি

আম রপ্তানি করার জন্য আমের গুনগত মান ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি।

ভুমিকা

আম চাষীদের গতানুগতিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত আমগুলো দেশিও ক্রেতাদের জন্য যথেষ্ট হলেও রপ্তানির জন্য তা যথেষ্ট নয়। আম চাষীগন বিভিন্ন ধাপে আম উৎপাদনের জন্য ১৫-৬২ বার কিটনাশক ব্যবহার করে থাকে যা জনস্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ঝুকি। তাই জনস্বাস্থের কথা বিবেচনা করে এবং রপ্তানির কথা মাথায় রেখে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়। 

আমরা আজকে জানবো ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি কি, ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) এর প্রয়োজনীয়তা, আম উৎপাদনে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি, ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির সুবিধাসমুহ, বিভিন্ন জাতের আমের ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ফলাফল, ব্যাগিং পদ্ধতির মাধ্যমে উৎপাদিত আম খাবার নিয়ম, রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের কৌশল, ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি ব্যবহারে সফলতা এবং এর ভবিষ্যৎ।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি কি?

একটা নির্দিষ্ট সময়ে বা বয়সে ফল গাছে থাকা অবস্থায় একটা বিশেষ ধরনের ব্যাগ দ্বারা ফলকে আবৃত করা হয়। এই এই পদ্ধতিটাকেই বলে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি। বিভিন্ন ধরনের ফলের জন্য এই ব্যাগ বিভিন্ন রং এবং আকারের হয়ে থাকে। আমের জন্য তবে সাধারণত দুই ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য নতুন। নির্দিষ্ট জাতের আমের জন্য নির্দিষ্ট ব্যাগ ব্যবহার করা হয় যেমন রঙিন নামের জন্য ব্যবহার করা হয় সাদা ব্যাগ এবং অন্যান্য জাতের আমের জন্য বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) এর প্রয়োজনীয়তা

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের কৃষকেরা তাদের জমিতে ফল উৎপাদনের জন্য মাত্রাতিরুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে আম চাষিরা আম সংগ্রহের পর থেকে পরের মৌসুমে আম সংগ্রহ পর্যন্ত প্রায় ১৫ থেকে ৬২ বার কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এই আম যেমন গুণগত মানে কম, তেমন এই আম সেবন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। 

গবেষণায় দেখা গেছে আম উৎপাদনের জন্য বছরে দুই থেকে পাঁচবার স্প্রে করলেই আম সংগ্রহ সুন্দরভাবে সম্ভব। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ফসল উৎপাদনকে বহু গুণে ব্যয় বহুল করে তুলছে। এ অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক উপকারী ও বন্ধু পোকার সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে আমে নির্দিষ্ট পরায়ণ সম্ভব হচ্ছে না। 

বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানা যাচ্ছে মানুষ প্রতিনিয়তই বিভিন্ন জটিল অজানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর থেকে মুক্তির সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি। ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে আম উৎপাদন করলে এই আম ঘরে রেখে অনেক দিন খাওয়া যায়। 

এ আম সংরক্ষণের জন্য কোন ফরমালিনের প্রয়োজন পড়ে না এছাড়াও এ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমের বিভিন্ন ধরনের দাগ বা পাখির আক্রমণ এবং প্রখর সূর্যালোক ও রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে সহজেই রক্ষা করা যায়। 

আমের বর্ধনশীল পর্যায়ে দুই ধরনের পোকা বেশি ক্ষতি করে। যদি নির্দিষ্ট সময়ে আম ব্যাগিং করা হয় তাহলে কোন প্রকার স্প্রে ছাড়াই এ পোকার আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া যাবে। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম বিষমুক্ত হয়। উৎপাদন খরচ কম হয় এবং পরিবেশের দূষণ মাত্রা কমে যায় ফলে আমের গুণাগুণের মান বাড়ে।

আম উৎপাদনে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি

আম ব্যাগিং করার উপযুক্ত সময় এবং পদ্ধতিসমূহঃ

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতিতে প্রত্যেক জাতের আমের ব্যাগিং করার সময় একেক রকম যেমন,
  • বারি আম- ১, ২, ৬, ৭, ল্যাংড়া এবং ক্ষীরশাপাত এর ব্যাগিং করার সময় ৪০-৫৫ দিন বয়সের গুটিতে।
  • বারি আম- ৩, ৪, ৮, ফজলি এবং আশ্বিনা এর ব্যাগিং করার সময় ৬০-৬৫ দিন বয়সের গুটিতে।
  • আগাম এবং মধ্যম জাতের আমের ব্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে আগাম ব্যাগিং করতে হবে।
  • নাবি জাতের আমের ক্ষেত্রে একটু দেরিতে ব্যাংকিং করতে হবে।
  • ব্যাগিং করার পূর্বে খেয়াল রাখতে হবে যেন আম ভেজা না থাকে।
  • আম ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ এবং আমের প্রাকৃতিক ঝরা বন্ধ হওয়ার পূর্বেই ব্যাগিং করতে হবে।
  • ব্যাগিং করার পূর্বে খেয়াল রাখতে হবে যেন আম ভেজা না থাকে।
  • স্প্রে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত তিনবার স্প্রে দেওয়ার কথা বলা আছে। প্রথমবার ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে, দ্বিতীয়বার স্প্রে দ্বিতীয় মুকুল আসার পরে অর্থাৎ মুকুল ১০ থেকে ১৫ সেমি লম্বা হলে এবং শেষবার যখন আমের গঠন মটর দানার মত হবে তখন।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতিতে ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) ব্যবহারের নিয়মকানুন

  • আমের ভালো উৎপাদনের জন্য ব্যাগিং পদ্ধতি খুবই কার্যকরী পদক্ষেপ। কিন্তু এর জন্য কিছু সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। সঠিক নিয়ম মেনে না চললে কিছু সমস্যায় পড়তে হবে। নিয়ম কানুন গুলো নিচে দেওয়া হল,
  • একটি পুষ্প মঞ্জরীতে যখন অনেকগুলো আম থাকে তখন প্রথমেই ফল পাতলা করতে হবে। সবচেয়ে ভালো এবং দাগ মুক্ত দেখে একটা বা দুইটা আম ব্যাগ করতে হবে। বড় জাতের আমের ক্ষেত্রে একটা পুষ্প মঞ্জরীতে একটার বেশি আম রাখা যাবে না। শুকনা আম বা গায়ে মরা, উপপত্র অথবা মুকুলের অংশবিশেষ লেগে থাকলে সেগুলো আগে পরিষ্কার করতে হবে ব্যাগিং করার পূর্বে।
  • সময় মত প্রয়োজনীয় ব্যাগ এবং শ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। উঁচু গাছের জন্য মই এর ব্যবস্থাও রাখতে হবে। আম অবশ্যই শুকনো ব্যাগিং করতে হবে এবং ব্যাগিং করার পূর্বে একটা কীটনাশক অথবা একটা ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। আম ব্যাগিং করার ভাল সময় রৌদ্রোজ্জ্বল দিন।এছাড়া ভেজা মৌসুমে ব্যাগিং করা একদমই উচিত নয়।
  • ব্যাগিং করার পূর্বে প্রথমে ব্যাগের উপরে দুই অংশ ভাঁজ করতে করতে মাছ বরাবর আসতে হবে। এরপর তার দিয়ে ভালোভাবে মাথা মুড়িয়ে দিতে হবে যাতে পিঁপড়া বা মিলিবাগ প্রবেশ করতে না পারে।
  • রঙিন আমের জন্য ব্যবহার করতে হবে সাদা ব্যাগ। এবং অন্য যে কোন জাতের আমের জন্য রঙিন ব্যাগ। এখানে একটু উল্লেখযোগ্য বিষয় দুই স্তর যুক্ত বাদামী রং এর ব্যাগ যে কোন প্রকার আমকে রঙিন অথবা হলুদ করতে পারে এর জন্য সময় নেয় ৩৫ থেকে ৪৫ দিন।
  • ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম উৎপাদন করতে হলে প্রথমে হাতে-কলমে শিখে নেওয়া ভালো। ব্যাগ ব্যবহার করার পরে যদি ছিঁড়ে যায় তাহলে সবগুলো একত্র করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে পানিতে ডুবিয়ে রাখলেও ব্যাগ পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

ব্যাগিং প্রযুক্তির প্রধান প্রধান সুবিধা সমূহ

  • নিরাপদ, রপ্তানিযোগ্য ও বিষমুক্ত আম সহজে উৎপাদন করা যায়।
  • কীটনাশক ছাড়াই শত ভাগ রোগ এবং পোকামাকড় আক্রমণ মুক্ত ভালো আম পাওয়া যায়।
  • যেকোনো জাতের আমকে আমরা রঙিন করতে পারব এবং আম সংরক্ষণ কালকে এ ব্যাগিং প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়াতে পারবো যা রপ্তানির জন্য খুবই কার্যকরী এর সংরক্ষণ কাল আনুমানিক ১০ থেকে ১৪ দিন।
  • এ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা কমবে প্রায় ৭০ থেকে৮০ ভাগ।

বিভিন্ন জাতের আমের ব্যাগিং প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং এর ফলাফল

ল্যাংড়াঃ ল্যাংড়া একটা মধ্যম জাত। এর ব্যাগিং ৪০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যে করতে হবে। এই জাতটি পরিপক্ক হলে হালকা সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এইজন্য ল্যাংড়া আমের ক্ষেত্রে বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। হালকা হলুদ রং হয় যখন ব্যাগিং করা আমের রং সংগ্রহ করা হয়। এই ব্যাগিং করা আমের ফলের শ্বাসের রং হলুদ। এর সংগ্রহ কাল ১১ দিন, এর টিএসএস ২৩%। 

 এ জাতের আমে রোগ এবং পোকার আক্রমণ দেখা যায় না।

আশ্বিনাঃ আশ্বিনা একটি নাবিজাত। এর কুটির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এ জাতের রং সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ বর্ণের হয় পরিপক্ক হলে এবং বৃষ্টিপাত হলে এর রং কিছুটা কালো বর্ণ হয়ে যায়। যেহেতু এর রং সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ তাই এর জন্য দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। 

এর ব্যাগিং করা আমের রং সংগ্রহের সময় হালকা হলুদ বর্ণের হয়। এই ব্যাগিং করা ফলের শ্বাস রং হলুদ হয় এর সংগ্রহকাল হয় ১২ দিন টিএসএস ১৯%। একইভাবে রোগ ও পোকার কোন আক্রমণ দেখা যায় না এবং এটি রপ্তানি যোগ্য।

ফজলিঃ আশ্বিনার মতো এটাও একটা নাবী জাত। একই ভাবে এই কুটির বয়সও ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে ব্যাগিং করতে হবে। এই জাত পরিপক্কের সময় হালকা সবুজ বর্ণের হয় এবং বৃষ্টিপাত হলে কালো বর্ণের হয়। এর জন্য ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে বাদামী রঙের। ব্যাগিং করা আমের রং হালকা হলুদ বর্ণের হবে এবং এর ফলের শ্বাসের রং হলুদ, সংগ্রহ কাল ১২ দিন। এই জাতেও রোগ এবং পোকার কোন আক্রমণ দেখা যায় না এবং এটি রপ্তানিযোগ্য।

ক্ষীরশাপাতঃ এর জাত একটি মধ্যম জাত। এর কুটির বয়স ৪০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যে ব্যাগিং আরম্ভ করতে হবে। এই জাত পরিপক্ক হলে হালকা সবুজ বর্ণ ধারণ করে এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হলে কালো বর্ণ হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ব্যাগিং করা ফলের শ্বাসের রঙ হবে হলুদ এর সংগ্রহকাল ১০ দিন টিএসএস ২৩ শতাংশ। 

আমে কোন প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ করে না।

বারি আম-১ঃ এই জাতটিকে আগাম জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৪০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি গাঢ় হলুদ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয়। তাই এর জন্য সাদা রঙের ব্যাগ ব্যবহার করলেই চলবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হলুদ।শ্বাসের রঙ হবে হলুদ, সংগ্রহকাল ১২ দিন এবং টিএসএস ২৩%। 

একইভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না

বারি আম-২ঃ এই জাতটিকে আগাম জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৪০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি গাঢ় হলুদ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয়। তাই এর জন্য সাদা রঙের ব্যাগ ব্যবহার করলেই চলবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হলুদ।শ্বাসের রং হবে হলুদ,সংগ্রহকাল ১৩ দিন এবং টিএসএস ১৯%। 

একইভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না।

বারি আম-৩ঃ এই জাতটিকে নাবী জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি হালকা সবুজ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে গাঢ় হলুদ বর্ণের।শ্বাসের রঙ হবে কমলা, সংগ্রহকাল ১২ দিন এবং টিএসএস ২৩%। 

একইভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না। এটি রপ্তানিযোগ্য।

বারি আম-৪ঃ এই জাতটিকে নাবী জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি হালকা সবুজ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয় এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হলে কালো বর্ণ হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হালকা হলুদ বর্ণের।

শ্বাসের রঙ হবে হলুদ, সংগ্রহকাল ১৩ দিন এবং টিএসএস ২২%। একই ভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না। এটি রপ্তানিযোগ্য।

বারি আম-৬ঃ এই জাতটিকে মধ্যম জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৪০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি হালকা সবুজ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয় এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হলে কালো বর্ণ হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হালকা হলুদ বর্ণের।

শ্বাসের রঙ হবে হলুদ, সংগ্রহকাল ৯ দিন এবং টিএসএস ২১%। একই ভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না। এটি রপ্তানিযোগ্য।

বারি আম-৭ঃ এই জাতটিকে নাবী জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি হালকা সবুজ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয় এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হলে কালো বর্ণ হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এ জাতের আমের ক্ষেত্রে গাছে যে পাশে সূর্যালোক এর আলো বেশি পড়বে সে পাশের আমগুলা রঙিন বেশি দেখা যাবে। 

তাই এর জন্য সাদা রঙের ব্যাগ ব্যবহার করলেই চলবে। ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হালকা হলুদ বর্ণের।শ্বাসের রঙ হবে হলুদ, সংগ্রহকাল ১২ দিন এবং টিএসএস ১৯%। একই ভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না। এটি রপ্তানিযোগ্য।

বারি আম-৮ঃ এই জাতটিকে নাবী জাত বলা হয়। এর গুটির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এর ব্যাগিং করতে হবে। এই জাতটি হালকা সবুজ বর্ণের হয় যখন পরিপক্ক হয় এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হলে কালো বর্ণ হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাগ দুই স্তরবিষ্ট বাদামী রঙের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। 

ব্যাগিং করা ফলের রঙ হবে হালকা হলুদ বর্ণের।শ্বাসের রঙ হবে কমলা, সংগ্রহকাল ১১ দিন এবং টিএসএস ১৮%। একই ভাবে আমে কোনো প্রকার রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণ দেখা যায় না।

রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের নিয়ম কানুন

আমি রপ্তানি যে সময় থেকে শুরু হয় সে সময় থেকে আম ব্যবসায়ী এবং আমচাষীরা আম রপ্তানির জন্য আগ্রহ ছিল। কিন্তু তাদের কাছে আম রপ্তানি প্রক্রিয়া একেবারেই নতুন ছিল। তাদের ধারণা ছিল প্রচলিত পদ্ধতিতে আম উৎপাদন করে রপ্তানি করা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে আম রপ্তানি করার জন্য কোন প্রকার জাত রপ্তানি যোগ্য সেটা জানা আগে জরুরী। 

আমের সব জাত রপ্তানি যোগ্য নয়। আম রপ্তানি করার জন্য ব্যবস্থা আম সংগ্রহের পর থেকে নিতে হবে। ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতিতে যেসব জাতের আম রপ্তানি যোগ্য সেগুলো হল হিমসাগর, ক্ষীরশাপাত, আশ্বিনা, বারি আম-২ বা লক্ষণভোগ, বারি আম-৩ বা আম্রপালি, বারি আম-৭, ল্যাংড়া, ফজলি এবং হাড়িভাঙ্গা। অন্যান্য জাতের আম এখনো রপ্তানি যোগ্য করে গড়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। 

এর জন্য গবেষকরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো জাতের আম গাছ থেকে সংগ্রহের পর থেকে আমের বৃদ্ধি পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে পরিচর্যার দরকার হয়। এর জন্য দরকার প্রুনিং, সার ব্যবস্থাপনা, ট্রেনিং, রোগ পোকামাকড় দমন ব্যবস্থা এবং সেচ ব্যবস্থাপনা।

আম গাছ পরিচর্যায় প্রথম যে কাজটি করতে হয় সেটি হল মরা ডালপালা এমন ভাবে ছেঁটে ফেলা যাতে সূর্যালোক গাছের ভিতর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। 

সাধারণত একটা গাছে কতটুকু আম আসবে তা জানা যায় আগস্ট মাসের মধ্যেই এবং তা নির্ভর করে ডগার পরিমাণের উপর এমনভাবে ডগা কাটতে হবে যেন বর্ষাকালে কর্তিত ডগাতে ফুল আসে। একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ডগার বয়স পাঁচ থেকে ছয় মাস না হলে ফুল আসে। যদি আমের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হয় তাহলে নতুন ডগার পরিমাণ আগস্ট মাসের আগেই বাড়াতে হবে। 

আম গাছের পরিচর্যা আরেকটি ধাপ হল গাছের সার প্রয়োগ। এই সার প্রয়োগ নির্ভর করে মাটির উপর। মাটিতে পুষ্টি গুনাগুনের উপর নির্ভর করবে একটা গাছে আমাকে সারা বছর কতটুকু সার দিতে হবে।

গোবর সার দেওয়ার নিয়ম গুলো নিচে দেওয়া হল , 
  • রোপনের এক বছর পরে 20 কেজি করে।
  • রোপনের দুই বছর পরে ২৫ কেজি করে।
  • প্রতিবছর এ সারের পরিমাণ বাড়াতে হবে পাঁচ কেজি করে।
  • ২৫ বছর অথবা এর উপরে যত গাছ আছে সে গাছগুলোতে সার দিতে হবে ১২৫ কেজি করে।
ইউরিয়া সার দেওয়ার নিয়ম গুলো,
  • ২৫০ গ্রাম করে রোপনের এক বছর পর।
  • ৩৭৫ গ্রাম করে রোপনের দুই বছর পর।
  • প্রতি বছর ১২৫ গ্রাম করে বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ২৭৫০ গ্রাম করে দিতে হবে।
টিএসপি দেওয়ার নিয়ম,
  • ১০০ গ্রাম রোপনের এক বছর পরে।
  • ২০০ গ্রাম রোপনে দুই বছর পরে।
  • এভাবে ১০০ গ্রাম করে প্রতিবছর বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ২৭৫০ গ্রাম করে দিতে হবে।
এমপি সার দেওয়ার নিয়ম,
  • ১০০ গ্রাম রোপনের এক বছর পরে।
  • ২০০ গ্রাম রোপনে দুই বছর পরে।
  • এভাবে ১০০ গ্রাম করে প্রতিবছর বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ২১৫০ গ্রাম করে দিতে হবে।
জিপসাম দেওয়ার নিয়ম,
  • ১০০ গ্রাম রোপনের এক বছর পরে।
  • ১৭৫ গ্রাম রোপনে দুই বছর পরে।
  • এভাবে ৭৫ গ্রাম করে প্রতিবছর বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ১৬০০ গ্রাম করে দিতে হবে।
জিংক সালফেট দেওয়ার নিয়ম,
  • ১০ গ্রাম রোপনের এক বছর পরে।
  • ১৫ গ্রাম রোপনে দুই বছর পরে।
  • এভাবে ৫ গ্রাম করে প্রতিবছর বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ১১০ গ্রাম করে দিতে হবে।
বোরিক অ্যাসিড দেওয়ার নিয়ম,
  • ৫ গ্রাম রোপনের এক বছর পরে।
  • ৭ গ্রাম রোপনে দুই বছর পরে।
  • এভাবে ২ গ্রাম করে প্রতিবছর বাড়াতে হবে।
  • ২০ বছর এবং এর উপরে প্রতিটি গাছের জন্য ৫০-১০০ গ্রাম করে দিতে হবে।
এই সমস্ত সার দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম অর্ধেক করতে হবে বর্ষার আগে আর দ্বিতীয় অর্ধেক বর্ষার পরে। নিয়ম অনুসারে এই সার প্রয়োগ করতে হবে এবং সার প্রয়োগের পরে বৃষ্টি না হলে আলাদাভাবে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের গুড়ি থেকে দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার দূরত্বে ৩০ মিটার প্রশস্ত এবং ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার গভীরতা রেখে একটা নালার মত সৃষ্টি করতে হবে এবং তাতে রাসায়নিক এবং জৈব সার ভালোমতো মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। 

কাছে প্রথম ফল আসার সময় ফলগুলো দুর্বল হয়ে থাকে এই সময় ফলের খাদ্যের দরকার হয়। বর্ষার সময় গাছ মাটিতে মিশে থাকা এই মিশ্রিত সারের মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করে যা নতুন পাতা বের হতে সাহায্য করে। খেয়াল রাখতে হবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে যত বেশি ডগা অথবা পাতা বের হবে পরের বছর ফল হওয়া সম্ভাবনা তত বেশি। 

অবশ্যই লক্ষ্যণীয় আম গাছে কখনোয় প্যাকলোবিউটাজল নামক রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা উচিত নয়।আম বাগানে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে সেটা হচ্ছে সেচের ব্যবস্থা করা মৌসুমে ঘন ঘন সেচ দিতে হবে তবে খেয়াল রাখতে হবে যদি মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রস থাকে তাহলে সেচ পরিমাণ মতো দিলেই হবে। 

সেচ দেওয়া সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো গাছে নিচে যেটুকু জায়গায় গাছের ছায়া পড়ে সেইটুকু জায়গায় থালার মতো বেসিন তৈরি করে পানি দিলে পানির পরিমাণ কম লাগে এবং কাজ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পায়। এছাড়া পদ্ধতিতে গাছের গোড়ায় কোন আগাছা জন্মায় না। শেষ দেওয়ার পরে জায়গাটুকুতে কচুরিপানা দ্বারা ঢেকে দেওয়া হলে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্দ্রতা থাকে। 

বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে আমরা মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি। এছাড়া মাটির উর্বরতা বা উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ধৈঞ্চা, সরিষা বা কালাইয়ের চাষ করা যেতে পারে।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত আম খাওয়ার নিয়ম

সাধারণভাবে উৎপাদিত আম গাছ থেকে পাড়ার তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই খেতে হয় নয়তবা পরে এগুলো পচে যায়। কিন্তু ব্যাগিং প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আম ঘরে রেখে ৬থেকে ৭ দিন পর খেতে হবে। যদি ব্যাগিং প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আম গাছ থেকে পাড়ার সাথে সাথে খাওয়া হয় তাহলে এর মিষ্টতা কম লাগবে। এটা যত বেশি বাসা রাখার পরে খাওয়া যাবে এর মিষ্টতা তত বেশি পাওয়া যাবে এ আম ৯ থেকে ১৪ দিন পরও অনায়াসে খাওয়া যায়।কোন অবস্থাতেই রঙ বিবেচনা করে এই আম কাটা উচিত হবে না।

পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে ব্যবস্থা

পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে অবশ্যই রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে ব্যবস্থা নিতে হবে নয়তোবা এ আম রপ্তানিযোগ্য হবে না। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার রপ্তানির জন্য মোটেই উপযোগী নয়। অনেকের ধারণা এই কীটনাশক দেওয়ার পরিমাণ বোঝার কোন উপায় নেই কিন্তু রপ্তানির আগে অবশ্যই আম পরীক্ষা করে নিতে হয়। 

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি ব্যাগিং প্রযুক্তিতে আমে তিনবার স্প্রে করতে হয়। প্রথমবার মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে, দ্বিতীয়বার মুকুল যখন ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা হবে এবং শেষে আম যখন মোটর দানা কৃতি হবে। এরপর ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আম রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে হবে কিছু যাদের আম পরিপক্ব হবার ৭ দিন পরে ব্যাগ খুলে দেখতে হবে। 

এছাড়াও সংশ্লিষ্ট গবেষকদের পরামর্শ নিতে হবে। কবে শব্দের মতে আমের পরিপক্কতা ৯০ ভাগ হলেই আমরা রপ্তানির জন্য ভালো। আমের পরিপক্কতার সময় যত বেশি হবে আম রপ্তানির জন্য তত ভালো।পাকা আম কখনোই রপ্তানির উপযুক্ত নয়। এছাড়াও আমে দাগ বা আঘাত বা যে কোন প্রকার আক্রমণ এসব যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি ব্যবহারের সফলতা এবং বাংলাদেশে এর ভবিষ্যৎ

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতিতে সফলতা আশানুরূপ। পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ১৬ জেলায় এ প্রযুক্তি ব্যবহারে সফলতা পাওয়া গেছে এবং রপ্তানি করা গেছে সফলভাবে। অন্যান্য রপ্তানিকারক দেশের মতো এই দেশেও ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি ব্যবহারের সফলতা ব্যাপকভাবে সারা ফেলেছে।অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা কমাতে এখন বেশিরভাগ আম ব্যবসায়ীরা এবং চাষিরা ঝুঁকছেন এই প্রযুক্তির দিকে।

বিগত বছরগুলোতে যারা এই প্রযুক্তি মেনে আম উৎপাদন করেছে তারা ভালো মানের রঙিন আম উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে এবং এবং ভালো দামে আমগুলো বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় দেশীয় ব্যাগ ব্যবহার করে আম উৎপাদনে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে ।২০১৪ সালে প্রথম বিদেশি ব্যাগ দিয়ে রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জে পরীক্ষা মূলক ভাবে এই ব্যাগিং পদ্ধতি শুরু করা হয়েছিল। 

এতে প্রমাণিত হয়েছিল এ ব্যাগ বিভিন্ন জাতের আমে ব্যবহার করা যাবে এবং খুব ভালো সফলতা পাওয়া গিয়েছিল।বাংলাদেশ আমের মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যায়। এ পরিবর্তিত আবহাওয়া ও জলবায়ুর জন্য এ ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি খুবই কার্যকর একটা পদক্ষেপ। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের মধ্যেও মানুষের কাছে একদম বিষমুক্ত খাটি আম পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু সফলতা নিম্নরূপ,
  • এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেসরকারি উদ্যোক্তাগুলো বাগান থেকে সরাসরি ৩২০০ থেকে ৭৫০০ মন দরে আম বিক্রি করেছেন।
  • এছাড়াও কয়েকটি আড়তে ৮০ থেকে ১৫০ টাকা দরে কেজিতে ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষীরশাপাত, গোপালভোগ, এবং আশ্বিনা বিক্রি করেছেন।
  • গত মৌসুমে প্রায় ৬৬৫ আম বিদেশে রপ্তানি হয়েছে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।
  • গত বছর ব্যাগিং করা আশ্বিনা আমকে আশ্বিন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ধরে রাখা সম্ভব হয়েছিল।
  • জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার নিযুক্ত দেশীয় প্রতিনিধি মি. মাইক রবসন ব্যাগিং প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আম কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

লেখকের মন্তব্য

সবশেষে বলা যায় ফল ব্যাগিং(Fruit Bagging) প্রযুক্তির মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন পদ্ধতিতে সফলতা অনেক। এছাড়াও খুব অল্প বালাইনাশক ব্যবহার করে খুব ভালো মানের আম উৎপাদন এবং রপ্তানি সম্ভব। এ রপ্তানির মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও ভূমিকা রাখতে পারব। তাই এই প্রযুক্তি আমাদের মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগলে এবং আপনাদের উপকারে আসলে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং পেজটি ফলো করে সাথে থাকুন। আরও জানতে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url