২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে

সর্বজনীন পেনশন বর্তমান সময়ে খুবই আলোচিত একটা বিষয়। ২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে তা নিয়ে আজকের আলোচনায় বিস্তারিত বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ভালমতো জানতে হলে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে

সরকারীভাবে ২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে তা নিয়ে জানতে হলে নিচের পোস্টে দ্রুত চলে জান। 

ভূমিকা 

বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম একটি নতুন উদ্যোগ। সরকারীভাবে এ উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনেকেরই সঠিক জানার অভাব রয়েছে। আজকে আমি সর্বজনীন পেনশন কি, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নিয়ম, ২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে এ পুরো বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এ বিষয়ে অনেকের সঠিক ধারণা অর্জন হবে।

সর্বজনীন পেনশন কি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম হল বাংলাদেশ সরকারের একটি নতুন উদ্যোগ যা দেশের প্রতিটি নাগরিককে বয়স হলে অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে। এই স্কিমের মূল লক্ষ্য হল দেশের প্রবীণ ও আর্থিকভাবে অরক্ষিত জনগণের জন্য আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এটি বিশেষ করে বৃদ্ধ, বিধবা, পঙ্গু এবং অসহায়দের জন্য কার্যকর হবে। 

স্কিমের অধীনে যোগ্য নাগরিকেরা মাসিক ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবে। ২০২৪ সালে এই প্রকল্পটি প্রথম চালু করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে এটি স্বেচ্ছামূলক হলেও পরে এটি বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মাসিক প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হবে। 

আরও পড়তে পারেনঃ

২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাংলাদেশের বাজেটে যেসবের দাম বাড়ছে যেসবের কমছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি কিভাবে ব্যবহার করা হবে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে রাসেল ভাইপার সাপ। 

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার নিয়ম কানুন এবং আয়কর আইন বা জরিমানা।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নিয়ম

২০২৪ সালে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নিয়ম বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল,
  • বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
  • এই স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য বয়স হতে হবে ১৮-৫০ বছরের মধ্যে।
  • বয়সের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম আছে যেমন বিশেষ ক্ষেত্রে কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী কর্মীরা ৫০ বছরের বেশি বয়স হলেও অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • অংশগ্রহণকারীদের মাসিক ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম হিসেবে জমা দিতে হবে যা তাদের আয়ের উপর নির্ভর করবে।
  • এটি বিভিন্ন স্ল্যাবে বিভক্ত সাধারণত সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
  • সরকারও কিছু ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামে আর্থিক সহযোগিতা করবে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের নাগরিকদের জন্য।
  • ৬০ বছর বয়সের পরে অংশগ্রহণকারীরা মাসিক পেনশন সুবিধা পাবেন।
  • জমাকৃত প্রিমিয়াম এবং এর উপর প্রাপ্ত সুদের ভিত্তিতে পেনশনের পরিমাণ নির্ধারণ হবে।
  • পেনশনভোগীরা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটি দিন তাদের পেনশন পাবেন।
  • কম সময়ের জন্য প্রিমিয়াম জমা দেওয়া স্কিম যা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পেনশন সুবিধা প্রদান করে।
  • কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী কর্মী এবং অসহায় মানুষের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ স্কিম।
  • অংশগ্রহণকারীদের স্কিমে নাম লেখাতে হবে যা অনলাইন ও অফলাইন উভয় করা যেতে পারে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়ের প্রমানপত্র এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য জমা দিতে হবে।
  • সরকারের একটি নির্দিষ্ট বিভাগ বা বোর্ড এসব পরিচালনা এবং পর্যবেক্ষণ করবে।
  • নিয়মিতভাবে স্কিমের কার্যকারিতা মূল্যায়ন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নীতিমালা আপডেট করা হবে।
  • পেনশনভোগী মারা গেলে জমাকৃত অর্থ বা পেনশনের অংশ নমিনীর কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
  • অসুস্থতা বা অন্য কোন জরুরি পরিস্থিতিতে জরুরি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
  • ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিবন্ধন ও পেমেন্ট প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে।
  • ব্যাঙ্ক আয়াকাউন্টের মাধ্যমে প্রিমিয়াম জমা দেওয়া এবং পেনশন গ্রহণের ব্যবস্থা থাকবে।

২০২৪ সালে যাদের আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে 

২০২৪ সালের বাজেটে নতুন ঘোষণা আসছে তা হল আগামি বছর জুলাই এর ১ তারিখের পর যারা সরকারি চাকরি পাবে তাদের জন্য আর কোন সরকারি পেনশন সুবিধা থাকবেনা। তাদেরকে আসতে হবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে। এটি বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

অর্থমন্ত্রী এ ঘোষণা দিয়েছেন যখন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, স্বায়ত্তশাসিত এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল। তার বক্তব্যের মাধ্যমে জানা গেছে এ স্কিমের আওতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নতুন যারা নিয়োগপ্রাপ্ত তাদের ইতিমদ্ধে এ স্কিমের আওতায় আনা হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের এ আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সরকার এ পেনশন ব্যবস্থাকে ৪ টি স্কিমে ভাগ করেছেন যেমন,

  • প্রবাসঃ বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের জন্য। এ স্কিমে প্রবাসিরা সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে।
  • প্রগতিঃ বেসরকারি খাতের কর্মীদের জন্য। এ স্কিমে শুরুতে ২ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার পর্যন্ত জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু তা বর্তমানে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
  • সুরক্ষাঃ উদ্যোক্তাদের জন্য। এই স্কিমে ২-৫ হাজার টাকা জমানো যাবে প্রতি মাসে।
  • সমতাঃ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারীদের জন্য। এই স্কিম একটু অন্যরকম এখানে ১০০০ টাকা জমানো যাবে যেখানে সরকার দিবে ৫০০ টাকা। এ সুবিধা নিতে গেলে সামাজিক নিরাপত্তার ভাতা সুবিধা নেওয়া যাবে না। সরকার তা বন্ধ করে দিবে।  

লেখকের মন্তব্য

সর্বজনীন পেনশন  স্কিম বাংলাদেশের নাগরিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০২৪ সালে এই স্কিমে যোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়মাবলী অনুসরণ করে নাগরিকরা তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url