১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা-২০২৪

প্রতি বছর ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনকে ঘিরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা হয় তার মধ্যে শোক দিবস নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা প্রতিযোগিতা হবে। তাই এই বিষয়ে জানতে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা-২০২৪

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা সম্পর্কে জানতে দ্রুত মূল আলোচনায় চলে জান। 

ভূমিকা

১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সৃতি বহন করে। এই ঘটনাটি দেশের স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে বড় ধরণের পরিবর্তন নিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং সুশাসনের প্রতি আঘাত হানে। এর ফলে দেশে সামরিক শাসনের উত্থান ঘটে এবং রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। ১৫ আগস্ট আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে স্বাধীনতা রক্ষায় নেতৃত্বের মূল্য কতটা অপরিসীম। 

১৫ আগস্ট সম্পর্কে প্রতিবেদন

১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক। 

আরও পড়ুনঃ

স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস চেক অনলাইন এবং এনআইডি(NID) স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড। 

২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাংলাদেশের বাজেটে যেসবের দাম বাড়ছে যেসবের কমছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি কিভাবে ব্যবহার করা হবে।

ইউনিয়ন পরিষদ Birth Certificate বা জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড। 

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র চার বছর পরেই এই মহান নেতা তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সেই দিন ভোররাতে কিছু সেনাসদস্য তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসবভনে হামলা চালায় এবং বঙ্গবন্ধু তার স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ পরিবারের অনেক সদস্যকে হত্যা করে। 

এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারনে প্রাণে বেঁচে যান। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে বাধাগ্রস্ত হয়। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এই বিচার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করে। 

২০১০ সালে আদালত কিছু অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে যা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ দিনটি বাঙালি জাতির জন্য গভীর শোকের প্রতীক এবং জাতীয় ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। 

এই দিনটি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি স্রদ্ধা জানানো হয় এবং তাদের সৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে এ দিনটি পালন করা হয়। এই দিবসটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে স্বাধীনতা এবং স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মূল্যবোধের প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অবদান কতটা অনন্য। তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বক্তব্য ২০২৪

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা নিয়ে বলার আগে এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট একটু আলোচনা করা জরুরি। জাতীয় শোক দিবস হচ্ছে সেই দিনটি যেদিন বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হারিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের এই দিনে শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নির্মমভাবে নিহত হন। 

এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর শোকের দিন হিসেবে পালিত হয়। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বলতে হয় এই দিনটি বাংলাদেশের মানুষকে শুধু শোকই নয় বরং একটি একটি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে একত্রিত করে। এই দিনটি বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারকে স্মরণ করিয়ে দেয়। 

জাতীয় শোক দিবসের গুরুত্ব কেবলমাত্র শোক প্রকাশেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি একটি উপলক্ষ যাতে করে জাতি নতুন করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। এই দিবসে দেশের সর্বস্তরের মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। 

বিশেষ প্রার্থনা, মোমবাতি প্রজ্বলন, আলোচনা সভা এবং বিভিন্ন দান-অনুদানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সৃতিকে চিরঞ্জীব করার চেষ্টা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর নানা রচনা, প্রবন্ধ এবং কবিতার মাধ্যমে তার আদর্শকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হয়। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা করার সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হতে পারে নানা কর্মসূচি। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে প্রধান শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের শীর্ষ নেতৃবিন্দ উপস্থিত থাকবেন। 

এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করবে। এ বছর শোক দিবসে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শোক দিবস রচনা করা মাধ্যমে। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা-২০২৪ 

জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের স্থপতি এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য এক গভির শোকের দিন হয়ে দাঁড়ায়। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং মহান রাষ্ট্রনায়ক। 

তার মৃত্যুর পর, বাংলাদেশ একটি বড় ধরণের নেতৃত্ব শূন্যতার সম্মুখীন হয়, যা দেশকে একটি দীর্ঘ সময় ধরে অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দেয়। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর বাসবভনে একদল বিপথগামী সেনা অফিসার হামলা চালিয়ে তাকে এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। 

এই হত্যাকাণ্ডে শেখ মুজিবর রহমানের স্ত্রী, তিন পুত্র, দুই পুত্রবধূ এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও নিহত হন। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা সে সময় বিদেশে থাকার কারনে প্রাণে বেঁচে যান। এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দিনে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান স্মরণ করা হয় এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। 

দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় যার মধ্যে আছে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, কালো ব্যাজ ধারন, কোরআন খানি, বিশেষ দয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন নানা ধরণের কর্মসূচি আয়োজন করে। 

বঙ্গবন্ধুর সৃতি বিজরিত সস্থানগুলোতে মানুষের ঢল নামে। সবাই মিলে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং তার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর সঙ্কট সৃষ্টি হয়। দেশে সামরিক শাসন জারি হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ষড়যন্ত্রের শিকার হয় দেশ। 

তবুও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং তার নেতৃত্বের গুনাবলি আজও দেশের মানুষের মধ্যে প্রেরণা যোগায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে দেশ অর্থনৈতিক, সামজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করেছেন।  

জাতীয় শোক দিবস শুধু একটি শোকের দিন নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞার দিনও বটে। এই দিনে জাতি শপথ নেয় যে তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করবে এবং তার স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করবে। তার অসমাপ্ত কাজ করার জন্য সবাই একযোগে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করে। 

শেখ মুজিবর রহমানের আত্মত্যাগ এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় শোক দিবস একটি মহৎ উদ্যোগ। এই দিনে সবাই মিলে তার সৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং তার আদর্শ অনুসরণ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। তার জীবনের মহান কর্ম ও অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আজও জাতির হৃদয়ে চিরজাগ্রত রয়েছে। 

লেখকের মন্তব্য 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস আমাদের জীবনের বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নির্মম হত্যা জাতির হৃদয়ে চিরস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে। শোক দিবসের মাধ্যমে আমরা এই বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দা জানাই এবং তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শপথ নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। 

আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে আপনার পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url