ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায়

বর্তমান সময়ে ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায় জানা জানা একজন মানুষ সোনার থেকেও দামি। আপনিও হতে পারেন সেরকম একজন। এর জন্য আপনাকে আজকের পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায়

ইউটিউব চ্যানেল আছে কিন্তু সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ পাচ্ছেন না। আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। এখানে ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায় বলা হয়েছে। দেরি না করে দ্রুত মূল আলোচনায় চলে যান। 

ভূমিকা

আমাদের মধ্যে অনেকের ইউটিউব চ্যানেল আছে। আমরা ভিডিও আপলোড দিচ্ছি কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্থাৎ দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ পাচ্ছিনা। এর পেছনে অনেক কারন আছে। এই বিষয় নিয়েই আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সাথে এর সমাধানও দেওয়া হয়েছে। 

ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার কি

ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার হল সেই ব্যবহারকারীরা যারা কোন নির্দিষ্ট ইউটিউব চ্যানেলের আপডেট এবং কনটেন্ট পেতে আগ্রহী এবং সেই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছেন। যখন একজন  ব্যবহারকারী একটি চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেন তখন তারা চ্যানেলের নতুন ভিডিওগুলি সম্পর্কে নোটিফিকেশন পান এবং সেই চ্যানেলের আপডেট সম্পর্কে অবগত থাকেন। 

আরও জানুনঃ

১৪টি সেরা চ্যাটজিপিটি(ChatGPT) ক্রোম এক্সটেনশন যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

কিভাবে গুগল জেমিনি ব্যবহার করে ইউটিউব ভিডিওগুলিকে সংক্ষিপ্ত করা যায়।

কিভাবে চ্যাট জিপিটি(ChatGPT) দিয়ে আপনার জীবনবৃত্তান্ত লিখবেন।

১২টি সেরা এআই(AI) হেডশট জেনারেটর যা আপনার ২০২৪ সালে ব্যবহার করা উচিত।

২০২৪ সালে উইন্ডোজ পিসির জন্য সেরা ১০টি অ্যান্ড্রয়েড এমুলেটর।

ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করার কারন

ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করার প্রধান কারণগুলির মধ্যে কয়েকটি রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের একটি চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে অনুপ্রাণিত করে। এই কারণগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে ব্যাখ্যা করা হয়েছে

নতুন কন্টেন্টের আপডেট পাওয়া

বিবরণ: যখন একজন ব্যবহারকারী একটি ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে তখন তারা নতুন কন্টেন্টের আপডেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে পান। ইউটিউব সাবস্ক্রাইবারদের নোটিফিকেশন পাঠায় যখন নতুন ভিডিও আপলোড করা হয় যাতে তারা কোনো ভিডিও মিস না করে।

উদাহরণ: আপনি যদি প্রায়ই একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলের ভিডিও দেখতে চান তবে সাবস্ক্রাইব করলে নতুন ভিডিওগুলি আপলোড হওয়া সাথে সাথে জানার সুবিধা পাবেন।

ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টের সাথে সম্পর্ক 

বিবরণ: ইউটিউব ব্যবহারকারীরা সাধারণত সেই চ্যানেলগুলি সাবস্ক্রাইব করে যেগুলি তাদের আগ্রহের বিষয়ে কন্টেন্ট সরবরাহ করে। এটি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে জানতে বা বিনোদনের জন্য হতে পারে।

উদাহরণ: একজন শিক্ষার্থী যিনি গণিত শিখছেন তিনি শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করবেন যা গণিতের টিউটোরিয়াল সরবরাহ করে।

কমিউনিটির অংশ হওয়া

বিবরণ: কিছু ব্যবহারকারী তাদের পছন্দের চ্যানেল বা ইউটিউবারের সাথে সংযুক্ত থাকতে চান এবং একটি কমিউনিটির অংশ হতে চান। সাবস্ক্রাইব করার মাধ্যমে তারা চ্যানেলের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

উদাহরণ: ভক্তরা তাদের প্রিয় গেমিং চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে কারণ তারা গেমিং কমিউনিটির অংশ হতে চান এবং অন্য গেমারদের সাথে আলোচনা করতে চান।

বিশেষ সুবিধা পাওয়া

বিবরণ: অনেক চ্যানেল সাবস্ক্রাইবারদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয় যেমন এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট, বিশেষ গিভঅ্যাওয়ে বা লাইভ স্ট্রিমে প্রায়োরিটি অ্যাক্সেস।

উদাহরণ: একজন ভক্ত একটি মিউজিক চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে কারণ তারা শুধুমাত্র সাবস্ক্রাইবারদের জন্য প্রিমিয়াম গান বা ভিডিও পেতে চান।

প্রিয় ইউটিউবারকে সাপোর্ট করা

বিবরণ: সাবস্ক্রাইব করা একটি ইউটিউবারকে সাপোর্ট করার একটি উপায়। এটি একটি চ্যানেলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহারকারীরা তাদের প্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সাপোর্ট করতে এটি করে।

উদাহরণ: আপনি যদি একজন ইউটিউবারের কাজের ভক্ত হন এবং চান যে তারা আরও কন্টেন্ট তৈরি করতে থাকুক তবে সাবস্ক্রাইব করে আপনি তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।

কন্টেন্টের উচ্চ গুণমান

বিবরণ: ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সেই চ্যানেলগুলি সাবস্ক্রাইব করেন যা তাদের জন্য উচ্চমানের এবং প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট সরবরাহ করে। এটি ভিডিওর প্রোডাকশন মান, তথ্যের নির্ভুলতা, বা উপস্থাপনার পদ্ধতির উপর নির্ভর করতে পারে।

উদাহরণ: আপনি একটি টেক রিভিউ চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে পারেন কারণ এটি সঠিক এবং তথ্যপূর্ণ রিভিউ প্রদান করে যা আপনাকে সঠিক ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

ব্যক্তিগত কাস্টমাইজেশন

বিবরণ: ইউটিউবের অ্যালগরিদম সাবস্ক্রাইবারদের ভিডিও পছন্দের উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট রিকমেন্ডেশন দেয়। সাবস্ক্রাইব করা চ্যানেলগুলির ভিডিওগুলি ইউটিউবের হোম পেজ এবং সাবস্ক্রিপশন ফিডে শীর্ষে থাকে।

উদাহরণ: আপনার পছন্দের একটি কুকিং চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করলে ইউটিউব আপনাকে বিভিন্ন রেসিপি ভিডিও রিকমেন্ড করবে যা আপনি পছন্দ করতে পারেন।

ভবিষ্যৎ কন্টেন্টের আশাবাদ 

বিবরণ: কখনও কখনও ব্যবহারকারীরা একটি চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেন কারণ তারা মনে করেন যে ভবিষ্যতে চ্যানেলটি আরও ভাল কন্টেন্ট তৈরি করবে।

উদাহরণ: একটি নতুন লঞ্চ করা চ্যানেল যেখানে ভালো সম্ভাবনা রয়েছে তা সাবস্ক্রাইব করা হতে পারে কারণ আপনি মনে করেন এটি ভবিষ্যতে আরও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করবে।

এই কারণগুলির মাধ্যমে ইউটিউব ব্যবহারকারীরা তাদের পছন্দের চ্যানেলগুলির সাথে সংযুক্ত থাকতে এবং নতুন এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট উপভোগ করতে পারেন।

ইউটিউব যেভাবে ভিডিওগুলিকে প্রচার করে

ইউটিউবে ভিডিওগুলি প্রচার করার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল এবং বিভিন্ন অ্যালগরিদম ও কৌশলের উপর নির্ভর করে। এখানে ইউটিউব কীভাবে ভিডিওগুলি প্রচার করে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো,

মূল অ্যালগরিদমগুলি

ভিউর টাইম: ইউটিউব দেখে ভিডিওটি কতক্ষণ দেখা হয়েছে। যে ভিডিওগুলি দীর্ঘ সময় ধরে দেখা হয় সেগুলি প্রচারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এনগেজমেন্ট: ভিডিওগুলিতে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ইত্যাদির পরিমাণ। বেশি এনগেজমেন্ট সহ ভিডিওগুলি বেশি প্রচারিত হয়।

ক্লিক-থ্রু রেট (CTR): ভিডিওটির থাম্বনেইল বা শিরোনামে ক্লিক করার হার। ভালো CTR থাকা ভিডিওগুলি প্রায়ই প্রচারিত হয়।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO): ভিডিওটির টাইটেল, ট্যাগ এবং বর্ণনা প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ডগুলি ব্যবহার করে কিনা তা দেখা হয়। ভালোভাবে অপ্টিমাইজড ভিডিওগুলি সার্চ রেজাল্টে শীর্ষে আসে।

বিভিন্ন ধরণের প্রচার 

সার্চ রেজাল্ট: সার্চ বক্সে যে কীওয়ার্ডগুলি ব্যবহার করা হয় তার উপর ভিত্তি করে ভিডিওগুলি সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত হয়।

হোমপেজ রিকমেন্ডেশন: ব্যবহারকারীর আগ্রহের উপর ভিত্তি করে হোমপেজে ভিডিওগুলির সুপারিশ করা হয়।

ইনফিড ভিডিওস: ব্যবহারকারীরা যখন ভিডিও ব্রাউজ করে তখন ইউটিউব সেই অনুযায়ী ভিডিওগুলির সুপারিশ করে।

এন্ড স্ক্রিন ও কার্ডস: ভিডিওর শেষে বা মাঝে প্রমোট করা হয়।

ট্রেন্ডিং পেজ: বিভিন্ন দেশে বা অঞ্চলে জনপ্রিয় ভিডিওগুলি এখানে প্রদর্শিত হয়।

ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ 

ইউটিউব ভিডিওগুলিকে প্রচার করার সময় ব্যবহারকারীর আচরণ গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে

ওয়াচ হিস্ট্রি: ব্যবহারকারীর দেখা ভিডিওগুলির ইতিহাস থেকে প্রাসঙ্গিক ভিডিওগুলির সুপারিশ করা হয়।

এনগেজমেন্ট হিস্ট্রি: ব্যবহারকারী কোন ভিডিওতে বেশি লাইক, কমেন্ট বা শেয়ার করেছেন তা দেখা হয়।

সাবস্ক্রিপশন: কোন চ্যানেলগুলিতে সাবস্ক্রাইব করেছেন এবং কি ধরণের কন্টেন্ট সাবস্ক্রাইবারদের পছন্দ।

চ্যানেল অপটিমাইজেশন ও ব্র্যান্ডিং

চ্যানেলটি কিভাবে অপ্টিমাইজ করা হয়েছে তা ভিডিওগুলির প্রচারে বড় ভূমিকা পালন করে,

চ্যানেল ব্র্যান্ডিং: আকর্ষণীয় ব্যানার, প্রোফাইল পিকচার এবং চ্যানেল ট্রেলার।

প্লেলিস্ট: প্রাসঙ্গিক ভিডিওগুলির প্লেলিস্ট তৈরি করা।

চ্যানেল এনগেজমেন্ট: নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা এবং ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগ রাখা।

বহিরাগত প্রচার কৌশল

ইউটিউবের বাইরে প্রচার করারও প্রভাব রয়েছে

সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং: ভিডিওগুলি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা।

ব্লগ ও ওয়েবসাইট এমবেডিং: বিভিন্ন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিডিও এমবেড করা।

ইমেইল নিউজলেটার: ইমেইলের মাধ্যমে ভিডিও প্রমোট করা।

বিজ্ঞাপন

ইউটিউব ভিডিওগুলির প্রচারে পেইড বিজ্ঞাপনের বড় ভূমিকা আছে

ইউটিউব অ্যাডস: ইউটিউবের নিজস্ব বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভিডিওগুলির প্রচার করা।

গুগল অ্যাডসেন্স: গুগলের বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভিডিওগুলির প্রমোশন।

ইউটিউব প্রিমিয়াম এবং সদস্যপদ

ইউটিউব প্রিমিয়াম সদস্য এবং চ্যানেলের সদস্যদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা দেয়,

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায়

অ্যাড ফ্রি দেখার অভিজ্ঞতা: প্রিমিয়াম সদস্যরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই ভিডিওগুলি দেখতে পারেন।

চ্যানেল সদস্যপদ: চ্যানেলগুলির সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করার সুযোগ।

ইউটিউবের এই সমস্ত কৌশল ও অ্যালগরিদমগুলি সম্মিলিতভাবে ভিডিওগুলি প্রচার করে এবং ব্যবহারকারীর জন্য সর্বোত্তম ভিডিওগুলির সুপারিশ করে।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার না বাড়ার কারন

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার না বাড়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এখানে কিছু সাধারণ কারণসমূহ দেওয়া হলো, 

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায়

কনটেন্টের গুণগত মান

আপনার ভিডিওগুলোর গুণগত মান নিম্নমানের হতে পারে। ভিউয়াররা সহজেই উচ্চমানের কনটেন্ট খুঁজে নেয় এবং তাতে সাবস্ক্রাইব করতে চায়। নিয়মিতভাবে নতুন ভিডিও আপলোড না করা হলে দর্শকরা আগ্রহ হারাতে পারে।

কনটেন্টের বৈচিত্র্য না থাকা 

 চ্যানেলে যদি একই ধরনের ভিডিও বার বার আপলোড করা হয় দর্শকরা তাতে আগ্রহ হারাতে পারে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের (SEO) অভাব

আপনার ভিডিওগুলো যদি ইউটিউব সার্চে সহজে পাওয়া না যায় তাহলে নতুন দর্শকরা আপনার চ্যানেল খুঁজে পাবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের অভাব

আপনি যদি আপনার কনটেন্টকে শুধুমাত্র ইউটিউবে সীমাবদ্ধ রাখেন তাহলে আপনার ভিডিওগুলি বড় দর্শকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবে না।

দর্শকদের সাথে সংযোগের অভাব

দর্শকরা যদি মনে করে যে আপনি তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করছেন না তারা সাবস্ক্রাইব করতে আগ্রহী হবে না।

স্পেসিফিক নীশের অভাব

চ্যানেলের থিম যদি খুব সাধারণ বা অবিশিষ্ট না হয় তাহলে নির্দিষ্ট দর্শকগোষ্ঠী আকৃষ্ট হবে না।

পর্যাপ্ত কল-টু-অ্যাকশন (CTA) না থাকা 

ভিডিওতে সাবস্ক্রাইব করার আহ্বান না জানালে দর্শকরা অনেক সময় সাবস্ক্রাইব করতে ভুলে যেতে পারে।

প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণের অভাব

আপনার প্রতিযোগীদের কনটেন্ট কি ধরণের তা না জানলে আপনি উন্নত কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন না।

কনটেন্টের দীর্ঘতা এবং ফরম্যাট

ভিডিও খুব দীর্ঘ বা খুব ছোট হলে দর্শকরা তা সম্পূর্ণ দেখতে আগ্রহী নাও হতে পারে।

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায় 

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানো একটি কৌশলগত প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন ধরণের কার্যকলাপ এবং কৌশলের সমন্বয়ে অর্জন করা যায়। এখানে কিছু কার্যকর উপায় বর্ণনা করা হল যা আপনাকে ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ দ্রুত বাড়াতে সাহায্য করবে,

How to increase YouTube channel subscribers and views fast

কনটেন্ট তৈরিতে কৌশলী হন 

  • গুণগত মানের কনটেন্ট: উচ্চ মানের এবং আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করুন যা আপনার টার্গেট দর্শকদের আগ্রহ বজায় রাখবে। ভিডিওর গুণগত মান, অডিও ক্ল্যারিটি এবং সম্পাদনার দিকে মনোযোগ দিন।
  • নিয়মিত আপলোড: নিয়মিতভাবে ভিডিও আপলোড করুন যেন দর্শকরা আপনার চ্যানেলের সাথে জড়িত থাকে এবং জানে যে আপনি নিয়মিত নতুন কনটেন্ট আনছেন।
  • দর্শকদের সমস্যা সমাধান: শিক্ষামূলক বা বিনোদনমূলক ভিডিও তৈরি করুন যা দর্শকদের নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান দেয় বা তাদের মজার কিছু প্রদান করে।
ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর উপায়

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO)

  • কীওয়ার্ড রিসার্চ: আপনার ভিডিওর জন্য জনপ্রিয় এবং প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ডগুলি গবেষণা করুন। YouTube ট্রেন্ডস এবং Google ট্রেন্ডস ব্যবহার করে আপনার কনটেন্টের জন্য সঠিক কীওয়ার্ড খুঁজে বের করুন।
  • ভিডিও টাইটেল এবং ট্যাগ: আকর্ষণীয় এবং কীওয়ার্ডসমৃদ্ধ টাইটেল এবং ট্যাগ ব্যবহার করুন। আপনার টাইটেল এমন হওয়া উচিত যা ভিডিওর মূল বিষয়কে সংক্ষেপে প্রকাশ করে।
  • বর্ণনা: ভিডিওর বর্ণনায় কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন এবং ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিন। এটি দর্শকদের এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের জন্যই সহায়ক হবে।

থাম্বনেইল এবং ব্র্যান্ডিং

  • আকর্ষণীয় থাম্বনেইল: ভিডিওর থাম্বনেইলটি আকর্ষণীয় এবং ভিডিওর মূল বিষয়বস্তু প্রদর্শন করতে হবে। কাস্টম থাম্বনেইল তৈরি করুন যা দর্শকদের ক্লিক করতে উদ্বুদ্ধ করে।
  • ব্র্যান্ডিং: আপনার চ্যানেলের লোগো, ব্যানার এবং ভিডিও ওভারলে ব্যবহার করে একটি ব্র্যান্ড পরিচয় তৈরি করুন। এটি আপনার চ্যানেলকে আরও পেশাদার এবং স্মরণীয় করে তুলবে।

দর্শকদের সাথে জড়িত থাকুন

  • কমেন্টের উত্তর দিন: আপনার ভিডিওতে দর্শকদের কমেন্টের উত্তর দিন। এটি আপনার দর্শকদের মূল্য দেয় এবং তাদের আরও জড়িত থাকতে উৎসাহিত করে।
  • লাইক এবং সাবস্ক্রিপশন অনুরোধ করুন: আপনার ভিডিওর শেষে দর্শকদের লাইক দিতে এবং সাবস্ক্রাইব করতে অনুরোধ করুন। এছাড়াও নোটিফিকেশন বেল আইকন প্রেস করার জন্য অনুরোধ করতে পারেন।

সামাজিক মিডিয়া এবং ক্রস-প্রমোশন

  • সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং: আপনার ভিডিওগুলি ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করুন। আপনার ফলোয়ারদের সাথে ভিডিও শেয়ার করে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আনতে পারেন।
  • অন্যান্য ইউটিউবারদের সাথে সহযোগিতা: আপনার নিকটস্থ বিষয়বস্তু ক্রিয়েটরদের সাথে সহযোগিতা করুন। তাদের দর্শকদের কাছ থেকে নতুন সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ অর্জন করার এটি একটি ভালো উপায়।

অ্যানালিটিক্স এবং পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং

  • ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন: ইউটিউবের অ্যানালিটিক্স টুল ব্যবহার করে আপনার ভিডিওর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করুন। এটি আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে কোন ধরনের ভিডিও দর্শকরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করছে।
  • A/B টেস্টিং: বিভিন্ন ভিডিও শিরোনাম, থাম্বনেইল এবং ট্যাগের পরীক্ষা করুন এবং দেখুন কোনটি বেশি কার্যকরী।

প্রোমোশন এবং বিজ্ঞাপন

  • ইউটিউব অ্যাডস: ইউটিউব অ্যাডস ব্যবহার করে আপনার ভিডিওগুলি প্রোমোট করুন। এটি একটি পেইড অপশন তবে এটি দ্রুত নতুন ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার অর্জন করতে সহায়ক।
  • ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং: ইউটিউব ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে কাজ করে তাদের মাধ্যমে আপনার চ্যানেল প্রোমোট করুন।

ফ্রি রিসোর্স এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করুন

  • ফ্রি টুলস: TubeBuddy, VidIQ, এবং অন্যান্য টুলস ব্যবহার করে আপনার ইউটিউব চ্যানেল অপ্টিমাইজ করতে পারেন। এই টুলগুলি আপনার কনটেন্ট এবং সার্চ অপ্টিমাইজেশনে সহায়ক হতে পারে।
এই উপায়গুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ দ্রুত বাড়াতে পারবেন। সময় ও অধ্যবসায়ের সাথে সাথে আপনার চ্যানেল সফলতা পেতে শুরু করবে।

চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর যেসব ভুল ধারণা

চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর অনেক প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ চালু আছে যেগুলো অনেকে মেনে চলেন কিন্তু এগুলো আসলে কার্যকর নয় বা ক্ষতিকর হতে পারে। এসব মিথ সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে তেমন কয়েকটি ভুল ধারণা আলোচনা করা হলো:

শুধুমাত্র বেশি কন্টেন্ট আপলোড করলেই সাবস্ক্রাইবার বাড়বে

অনেকে মনে করেন যে চ্যানেলে বেশি কন্টেন্ট আপলোড করলেই সাবস্ক্রাইবার বাড়বে। যদিও নিয়মিত আপলোড করা গুরুত্বপূর্ণ তবে কন্টেন্টের মানও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কম গুণমানের অনেক কন্টেন্ট চ্যানেলের খ্যাতি ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং দর্শকদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হতে পারে।

সাবস্ক্রাইবার কেনা

অনেকে মনে করেন সাবস্ক্রাইবার কিনলে চ্যানেল দ্রুত বড় হবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কেনা সাবস্ক্রাইবার সাধারণত চ্যানেলের সাথে বাস্তবিকভাবে সম্পৃক্ত নয় এবং তারা ভিডিও দেখেন না। এতে চ্যানেলের এনগেজমেন্ট রেট কমে যায় এবং এটি ইউটিউব অ্যালগরিদমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ভাইরাল ভিডিওই সবকিছু

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ মনে করেন যে একটি ভাইরাল ভিডিও তাদের চ্যানেলকে বড় করে দেবে। যদিও ভাইরাল ভিডিও চ্যানেলের জন্য তাৎক্ষণিক ভিউ নিয়ে আসতে পারে তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে সাবস্ক্রাইবার ধরে রাখার নিশ্চয়তা দেয় না। ধারাবাহিকভাবে মানসম্পন্ন কন্টেন্ট প্রদান চ্যানেলের জন্য বেশি কার্যকর।

কেবলমাত্র SEO করলেই হবে

ভিডিও অপ্টিমাইজেশন বা SEO একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তবে এটি একমাত্র নয়। ভিডিওর শিরোনাম, ট্যাগ এবং বর্ণনা ভালোভাবে অপ্টিমাইজ করা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পাশাপাশি দর্শকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিযোগিতার কন্টেন্ট কপি করা

অনেকে মনে করেন সফল চ্যানেলের কন্টেন্ট কপি করলে তাদের চ্যানেলও সফল হবে। এটি একটি ভুল ধারণা। ইউটিউব দর্শকরা মূল ও অনন্য কন্টেন্টের মূল্যায়ন করে। কপি করা কন্টেন্ট চ্যানেলের খ্যাতি ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং এটি কপিরাইট ইস্যুর সৃষ্টি করতে পারে।

কেবলমাত্র ক্লিকবেট শিরোনাম ব্যবহারের উপর নির্ভর করা

ক্লিকবেট শিরোনাম ব্যবহার করে কিছু সময়ের জন্য বেশি ভিউ পেতে পারেন কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। দর্শকরা যদি কন্টেন্টের শিরোনাম এবং বাস্তব বিষয়বস্তুর মধ্যে মিল না পান তাহলে তারা হতাশ হবে এবং আপনার চ্যানেল থেকে সরে যেতে পারে।

কেবলমাত্র সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ

অনেকে মনে করেন যে শুধু সাবস্ক্রাইবার সংখ্যাই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি তবে এনগেজমেন্ট, ভিউ টাইম এবং দর্শকদের সাথে সংযোগ স্থাপনও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রচুর ট্রাফিক পেলেই চ্যানেল বড় হবে

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক আসা ভালো কিন্তু সেগুলো যদি সঠিকভাবে লক্ষ্যযুক্ত না হয় তাহলে এই ট্রাফিক সাবস্ক্রাইবারে রূপান্তরিত হবে না। এর থেকে ভালো হলো যারা আপনার কন্টেন্টে আগ্রহী তাদেরকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টার্গেট করা।

সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে শুধুমাত্র গিভঅ্যাওয়ে বা প্রতিযোগিতা করা

গিভঅ্যাওয়ে বা প্রতিযোগিতা সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে পারে কিন্তু এটি অস্থায়ী হতে পারে। অনেক সময় গিভঅ্যাওয়ে শেষ হয়ে গেলে নতুন সাবস্ক্রাইবাররা চ্যানেল ত্যাগ করতে পারে। ধারাবাহিকভাবে মানসম্পন্ন কন্টেন্ট প্রদানই চ্যানেলের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ভিডিওর থাম্বনেইল নিয়ে একেবারেই চিন্তা না করা

থাম্বনেইল ভিডিওর প্রথম ইমপ্রেশন তৈরি করে। যদি থাম্বনেইল আকর্ষণীয় না হয় তবে দর্শকরা ভিডিওটি দেখবে না। তবে থাম্বনেইলকে সঠিকভাবে আপটুডেট করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে এটি ভিডিওর বিষয়বস্তুর সাথে মানানসই হয়।

লেখকের মন্তব্য 

ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চ্যানেলের কন্টেন্ট মানসম্পন্ন রাখা, দর্শকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা এবং ইউটিউবের নিয়মাবলী মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। মিথ্যা ধারণার ভিত্তিতে কাজ না করে পরিকল্পনা এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সফল ইউটিউব চ্যানেল গড়ে তোলা এবং ইউটিউব চ্যানেলে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ বাড়ানোর সম্ভব। 

আশা করি আজকের পোস্ট আপনাদের যারা ইউটিউব নিয়ে কাজ শুরু করবেন ভাবছেন তাদের অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরও পোস্ট পেতে এই পেইজটি ফলো করুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url