তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো নিয়ে অনেকেই অস্বস্তির মধ্যে পড়ে আছেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পেটে মেদ জমার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই লেখায় তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ১৫টি সহজ ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। 

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায় মেনে চলে সমস্যার সমাধান পেতে দ্রুত মূল আলোচনায় চলে যান। 

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়

পেটের চর্বি কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায়গুলি খুবই কার্যকর হতে পারে, যদি নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা হয়। তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায় নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, যা আপনাকে সুস্থ ও ফিট রাখতে সহায়ক হবে:

লেবু পানি পান

লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়গুলির মধ্যে অন্যতম। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে পেটের চর্বি দ্রুত কমে।

দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ

খাবার খাওয়ার পর পাকস্থলী থেকে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে, অর্থাৎ পেট আর মস্তিষ্কের মধ্যে একটি যোগাযোগ স্থাপন হয়। সাধারণত পেট ভরে গেছে এমন তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছাতে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগে। কিন্তু দ্রুত খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে মস্তিষ্ক সেই সংকেত পাওয়ার আগেই অনেকটা খেয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে। এর ফলে আপনি বুঝতে না পেরেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলতে পারেন, কারণ পেট ভরে গেছে এমন বার্তা মস্তিষ্কে ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারে না।

আদা চা

আদার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। 

প্রতি বেলার খাবার যেন বাদ না যায়

অনেকেই সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে সোজা দুপুরের খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেন কিন্তু এর ফলে পরে বেশি খাবার খাওয়ার বা অস্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এটি পেটের মেদ বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়।

পেটের মেদ কমাতে, আপনার খাদ্যাভ্যাসে কোনো বেলা বাদ দেওয়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিবর্তন করা জরুরি। প্রতিটি বেলার খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। কোনো কারণে খাবার বাদ পড়লেও, পরবর্তীতে অতিরিক্ত খাবার বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, যাতে মেদ জমার সম্ভাবনা না বাড়ে।

হালকা ব্যায়াম

প্রতিদিনের হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইক্লিং পেটের চর্বি কমাতে সহায়ক। ব্যায়াম শরীরের ক্যালোরি খরচ বাড়িয়ে মেটাবলিজম ত্বরান্বিত করে।

খাবার খাওয়ার জন্য ছোট প্লেট বেছে নিন

পেটের মেদ কমানোর জন্য, খাবারের পরিমাণের ওপর নজর রাখা জরুরি। সাধারণত বড় প্লেটে খাবার পরিবেশন করলে, অবচেতনভাবে বেশি খাবার নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়, কারণ বড় প্লেটে অনেক বেশি খাবার আঁটানো সম্ভব। 

অনেক মানুষ প্লেটে রাখা খাবার শেষ না করে উঠতে পারেন না, এমনকি পেট ভরে গেলেও। ফলে প্রয়োজনের বেশি খাওয়া হয়ে যায় যা ওজন বৃদ্ধি এবং শরীরে মেদ জমার কারণ হতে পারে। পেটের মেদ কমাতে, ছোট প্লেটে খাবার পরিবেশন করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ছোট প্লেটে খাবার নিলে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।

সবুজ চা পান

সবুজ চা বিপাক বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পুড়িয়ে পেটের চর্বি কমাতে ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন ২-৩ কাপ সবুজ চা পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

আনমনে খাওয়ার  অভ্যাস পরিহার

যদি খাওয়ার সময় অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত থাকেন, যেমন টিভি দেখা বা ফোনে কিছু দেখা, তাহলে আপনি কী পরিমাণ খাবার খাচ্ছেন সেদিকে সচেতনভাবে নজর রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আনমনে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার খাওয়া হয়ে যেতে পারে যা পেটের মেদ বাড়ার অন্যতম কারণ।

অনেকের ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায় যে, ক্ষুধা না থাকা সত্ত্বেও টিভি দেখতে দেখতে কিছু না কিছু খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে। এ ধরনের খাবার সাধারণত স্বাস্থ্যকর নয়, যেমন ভাজাপোড়া, মুড়ি বা চানাচুর। খেয়াল করলে দেখা যাবে, আমরা এক হাতে এসব খাবার তুলে খাচ্ছি এবং অন্যদিকে আমাদের মনোযোগ অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে।

শসা ও লেবুর ডিটক্স পানি

ডিটক্স পানি তৈরি করতে শসা এবং লেবুর টুকরো পানিতে ভিজিয়ে রেখে প্রতিদিন খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং মেদ কমাতে সহায়তা করে।

মানুসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন

মানসিক চাপ বা স্ট্রেসও শরীরে মেদ জমানোর একটি কারণ। যখন আমরা দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক চাপের মধ্যে থাকি, তখন আমাদের শরীরে 'কর্টিসল' নামে একটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনের উচ্চমাত্রা চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে।

কর্টিসল হরমোন পেটের মেদ বাড়াতে তিনটি প্রধান কাজ করে:
  • এটি শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় বিশেষভাবে পেটে চর্বি জমাতে সহায়তা করে, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘সেন্ট্রাল অ্যাডিপোসিটি’ বলা হয়।
  • এটি গ্রেলিন নামক হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভব করার জন্য দায়ী।
  • লেপটিন নামক হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয় যা আমাদের পেট পূর্ণ রয়েছে এমন অনুভূতি তৈরি করে।
অর্থাৎ, এই হরমোনগুলোর কারণে আমরা সহজে পেট পূর্ণ মনে করি না, ফলে বারবার ক্ষুধা লাগে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে যে চর্বি জমে তা শরীরের মেদ হিসেবে রূপ নেয়।

অতএব, মেদ কমাতে মানসিক চাপের সঠিক পরিচালনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, নিজের পছন্দের কাজ করা, মেডিটেশন এবং প্রয়োজন হলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া মানসিক চাপ মোকাবেলার জন্য কার্যকরী উপায়।

তিসি বীজ

তিসি বীজে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবার পেটের চর্বি কমাতে খুবই কার্যকর। তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়গুলির মধ্যে এটি একটি বিশেষ উপায়।

ঘুমের রুটিন ঠিক করে ফেলা

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ওজন বৃদ্ধি পেতে সহায়ক। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। রাত জেগে থাকা অবস্থায় কিছু খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে যা অতিরিক্ত ক্যালোরি শরীরে মেদ হিসেবে জমা করতে পারে। যদি রাতে ঘুমিয়ে থাকা হতো, তাহলে সেই অতিরিক্ত ক্যালোরি খাওয়া হত না।

রাত জেগে কাজ করার সময় সাধারণত আমরা ক্ষতিকর ফ্যাট বা চিনিযুক্ত খাবার বা অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করি। এসময় খাবারের স্বাস্থ্যকর হওয়ার বিষয়ে খুব একটা চিন্তা করা হয় না।এছাড়া, যদি নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হয়, তাহলে এটি মানসিক চাপ বা স্ট্রেস সৃষ্টি করতে পারে। এই স্ট্রেস আবারও বাড়তি ওজন এবং পেটের মেদ জমার জন্য বিভিন্নভাবে দায়ী হয়ে ওঠে।

মেথি ভেজানো পানি

মেথি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ফ্যাট কমায়। রাতে ১ চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

সাদা চাল, সাদা আটার বিকল্প বাছুন

সাদা চাল এবং সাদা আটা তৈরি করার সময় তাদের থেকে ফাইবার বা আঁশসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান ফেলে দেয়া হয়। ফাইবার খাবারকে ধীরে ধীরে হজম করতে সহায়তা করে, কিন্তু ফাইবার ফেলে দেওয়ার কারণে এই খাবারগুলি দ্রুত হজম হয়ে যায়, ফলে রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রা তাড়াতাড়ি বেড়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সাদা চাল ও সাদা আটার মতো প্রক্রিয়াজাত শস্যদানা বেশি খাওয়ার ফলে মেদ জমার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, লাল চাল বা ঢেঁকীছাঁটা চাল (যাকে কুড়াকাটা চালও বলা হয়) এবং লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা বেশি খাওয়ার সঙ্গে পেটের মেদ কমানোর সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

লাল চাল বা লাল আটার স্বাদের প্রতি অনেকের অভ্যস্ততা কম হতে পারে, ফলে প্রথমে এগুলি খাওয়া কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু এগুলি পেটের মেদ কমাতে এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তাই ধীরে ধীরে এগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। শুরুতে সাদা চাল বা সাদা আটার সঙ্গে কিছুটা লাল চাল বা লাল আটাও মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিড শরীরের ফ্যাট পোড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে ১ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার পান করলে পেটের চর্বি কমে।

লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি খাবারের মোড়কটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিন।

লো-ফ্যাট খাবার খেলে মেদ বাড়ার বিষয়টি একটু অবাক করার মতো হতে পারে। কারণ লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-মুক্ত খাবারগুলো সাধারণত স্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু এসব খাবারও মাঝে মাঝে অস্বাস্থ্যকর হতে পারে।

যখন কোনো খাবারকে লো-ফ্যাট হিসেবে তৈরি করা হয়, তখন সেখানে থেকে ফ্যাট কমানো বা সরানো হয়। এতে খাবারটির স্বাদ অনেকের কাছে কম হতে পারে, তাই খাবার প্রস্তুতকারকেরা সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়াতে অতিরিক্ত চিনি যোগ করে।

পেটের মেদ কমানোর জন্য সতর্ক থাকা জরুরি। অতিরিক্ত চিনি ক্যালোরি বাড়িয়ে দেয়, খাবারটিকে অস্বাস্থ্যকর করে এবং ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তাই লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি খাবার কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, তাতে কোনো চিনি যোগ করা হয়েছে কি না, সেটা মোড়কে দেখে।

পর্যাপ্ত পানি পান

পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে কাজ করে এবং তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়গুলির মধ্যে অন্যতম।

সবসময় অ্যাকটিভ থাকুন

শুধু শুয়ে-বসে থাকলেই শরীরে মেদ জমে, এটা অনেকেই জানেন। তবে এই সমস্যার সহজ সমাধান হলো সপ্তাহে ৫ দিন, মাত্র ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা। এর মাধ্যমে সারা সপ্তাহে আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করে আপনি প্রচুর উপকার পাবেন। এতে রোগব্যাধির সম্ভাবনা কমবে এবং শরীরের চর্বির পরিমাণও হ্রাস পাবে।

রাতারাতি চর্বি কমানোর আশা করা উচিত নয়। হাঁটা চালিয়ে যেতে হবে এবং যদি সম্ভব হয়, কিছু ভারোত্তোলন ও স্ট্রেংথ ট্রেনিংও করতে পারেন। এছাড়া, যদি অন্য কোনো ব্যায়াম আপনার জন্য সুবিধাজনক হয়, সেটিও করতে পারেন। 

হাই প্রোটিন ডায়েট

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, মুরগির মাংস, বাদাম খেলে শরীরের পেশি বৃদ্ধি পায় এবং চর্বি কমে।

শস্য-জাতীয় খাবার খাওয়া 

শস্যজাতীয় খাবারগুলি ফাইবারে সমৃদ্ধ। এগুলি শুধু শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়ক নয়, বরং ক্ষুধার অনুভূতি কমাতে এবং উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের চাহিদাও হ্রাস করতে সাহায্য করে। উচ্চ ফাইবারযুক্ত শস্য ওজন কমাতে এবং পেটের মেদ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আঁশযুক্ত খাবার 

আঁশ সমৃদ্ধ খাবার যেমন সবজি, ফল, ওটস ইত্যাদি খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং চর্বি কমাতে সহায়ক হয়।

বাদাম ও বীজ

বাদাম ও বীজে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং প্রোটিন পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। এটি তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়গুলির একটি অংশ।

ডালিমের রস

ডালিমের রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমিয়ে তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন জিরা পানি পান করার অভ্যাস

সকালে পানির মধ্যে জিরা মিশিয়ে পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, পেটের ফোলাভাব কমায় এবং পেটের মেদ কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

উপরোক্ত উপায়গুলি নিয়মিতভাবে অনুসরণ করলে পেটের চর্বি দ্রুত কমবে এবং আপনি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি অনুভব করবেন।
 
আরও পড়ুনঃ




মহিলাদের পেটে মেদ হওয়ার কয়েকটি কারণ

মহিলাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে, যার মধ্যে অন্যতম হলো পেশী কমে যাওয়া এবং চর্বির বৃদ্ধি। ইস্ট্রোজেন হরমোনের হ্রাস পাওয়ার কারণে শরীরের মেদ, বিশেষ করে পেটে, দ্রুত জমা হয়। পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো অনেক মহিলার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে, তবে এর কারণগুলো জানা থাকলে তা মোকাবেলা করা সহজ হয়। 

পেটের চর্বি বা ভুরি

  • হরমোনের পরিবর্তন: মহিলাদের পেটে মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট্রোজেন হরমোনের হ্রাস। এই হরমোনের ঘাটতি পেটের চারপাশে চর্বি জমার কারণ হতে পারে, যা অনেকের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
  • পর্যাপ্ত চলাফেরার অভাব: নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রমের অভাবে পেটে চর্বি জমে। মহিলাদের মধ্যে অনেক সময় চলাফেরার ঘাটতি দেখা যায় যা কোমরের চারপাশে অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। এটি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো জীবনঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • বংশগত প্রভাব: অনেকের ক্ষেত্রে পেটের চর্বি বংশগতভাবে হতে পারে। যদি পরিবারের অন্য সদস্যদের ওজন বেশি থাকে, তাহলে তাদেরও পেটে চর্বি জমার সম্ভাবনা থাকে।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: চর্বিযুক্ত বা চিনিযুক্ত খাবারের অতিরিক্ত গ্রহণ পেটের মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। যারা নিয়মিত এই ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন, তাদের পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
  • মানসিক চাপ: মানসিক চাপের ফলে শরীরে কর্টিসল নামক হরমোন নিঃসৃত হয় যা পেটে চর্বি জমাতে পারে। স্ট্রেসের প্রভাবও পেটের মেদ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
  • অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ: অ্যালকোহল শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যুক্ত করে, যা পেটের চর্বি বাড়াতে সহায়তা করে।
  • পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: কম ঘুমের ফলে শরীরের বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, যার ফলে পেটের চর্বি জমা হতে শুরু করে। পর্যাপ্ত ঘুম না পেলে শরীর অতিরিক্ত চর্বি সংরক্ষণ করতে থাকে।

মহিলাদের পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব, তবে এর জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও নিয়মিত ব্যায়াম।

মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়

মহিলাদের পেটে মেদ জমা হওয়া বেশ স্বাভাবিক একটি বিষয়, বিশেষ করে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব। পেটের মেদ কমানোর জন্য কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে যা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।

  • তাড়াতাড়ি খাবার অভ্যাস পরিবর্তন: দ্রুত খাওয়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্ক বুঝতে পারে না যে আমরা পূর্ণ হয়েছি কি না। এটি পেটের মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে। মনোযোগ দিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়া অর্থাৎ মননশীল খাওয়া, পেটের চর্বি কমাতে সহায়ক। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার না খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
  • প্রতি বেলার খাবার খাওয়া: কোনো খাবার বাদ দেওয়া পেটের মেদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে সকালের নাশতা বাদ দিলে আমরা অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকি যা মেদ বাড়ায়। তাই প্রতিটি বেলার খাবার নিয়মিতভাবে খাওয়া উচিত এবং পেটের চর্বি কমাতে নিয়মিত সুষম খাদ্যগ্রহণ করতে হবে।
  • খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব যদি আমরা খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমিত খাবার গ্রহণ করা পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
  • লো-ফ্যাট খাবার এবং চিনি নিয়ন্ত্রণ: লো-ফ্যাট খাবার প্রায়ই চিনি সমৃদ্ধ হয় যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিনি পেটের চর্বি বাড়ায়, তাই লেবেল দেখে খাবারের উপাদান যাচাই করা উচিত।
  • শরীরচর্চা: পেটের মেদ কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা অপরিহার্য। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা এবং হালকা ব্যায়াম পেটের চর্বি কমাতে সহায়ক। এছাড়াও, শক্তিশালী পেশী তৈরি করার জন্য ওজন উত্তোলন বা অন্য কোনও ব্যায়াম যোগ করা যেতে পারে।
  • পর্যাপ্ত ঘুম: পেটের চর্বি কমাতে পর্যাপ্ত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা ঠিকমতো ঘুমাই না, তখন শরীরে কর্টিসল নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা মানসিক চাপ বাড়ায় এবং পেটের চর্বি বাড়তে পারে। প্রতিরাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরের বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে এবং পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান: পানি আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় যা পেটের মেদ কমানোর জন্য সহায়ক। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এছাড়া, প্রতিটি খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ পেটের চর্বি বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় যা পেটের আশেপাশে চর্বি জমা করার প্রবণতা তৈরি করে। যোগব্যায়াম, ধ্যান বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে পেটের মেদ কমানো সহজ হয়।
  • প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়। মেয়েদের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাল, মাছ, মাংস, ডিম, বাদাম এবং শাকসবজি রাখলে পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য হবে।
  • চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো: পেটের চর্বি কমাতে চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি। এই ধরনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ও চিনি থাকে যা শরীরে চর্বি জমায়। প্রাকৃতিক ও সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকলে শরীরের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • নিয়মিত হাঁটা ও ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি: পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি দৈনন্দিন কার্যক্রমে সচল থাকা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত হাঁটা, সিঁড়ি ব্যবহার, এবং দিনের মধ্যে ছোট ছোট বিরতিতে কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়িয়ে পেটের মেদ কমানো যায়।

এই সব উপায়গুলো নিয়মিতভাবে মেনে চললে মহিলাদের পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব এবং একটি সুস্থ, ফিট শরীর অর্জন করা সহজ হবে।

 তল পেটের চর্বি কমানোর উপায়

তলপেটে মেদ জমে যাওয়া বেশিরভাগ মানুষের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে। তলপেটের মেদ শুধু সৌন্দর্যগত সমস্যাই নয়, এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। তলপেটে চর্বি জমার কারণ অনেক হতে পারে, যেমন জিনগত প্রভাব, মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাকের হার কমে যাওয়া। 

এই মেদ থেকে মুক্তি পাওয়া এত সহজ নয়, তবে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং কিছু কার্যকরী অভ্যাসের মাধ্যমে এটি সম্ভব। নিচে মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর জন্য কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে খাদ্যাভ্যাস অন্যতম। খাদ্য তালিকায় প্রচুর ফল, শাকসবজি, হোল গ্রেইন, সালাদ এবং আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। লাল চাল এবং লাল আটা গ্রহণ করুন, সাদা চাল এবং ময়দার পরিবর্তে। চিনিযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত ব্যায়াম

প্রতিদিন নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম পেটের মেদ কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর। শুধুমাত্র কার্ডিও ব্যায়াম নয়, এর সঙ্গে ভার উত্তোলন এবং পেশি গঠনের ব্যায়াম যুক্ত করা উচিত। ক্রাঞ্চ, ওঠা-বসা, দড়ি লাফের মতো ব্যায়ামগুলো পেটের চর্বি বা ভুরি কমাতে সহায়ক।

মানসিক চাপ কমানো

তলপেটের মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মানসিক চাপ। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা শরীরে মেদ জমায়। প্রাণায়াম এবং ধ্যানচর্চার মতো স্ট্রেস মোকাবিলার উপায়গুলো কাজে লাগান। এটি মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং পেটের মেদ কমাতে সহায়ক।

পর্যাপ্ত ঘুম

রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে শরীরের বিপাকীয় কার্যকলাপ সঠিকভাবে কাজ করে না, যার ফলে মেদ জমার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত ঘুম পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর সহজ উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম। সঠিক ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে যা মেদ কমাতে সহায়ক।

জোরে হাঁটা ও অন্যান্য কার্ডিও ব্যায়াম

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে প্রতিদিন দ্রুত হাঁটা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। হাঁটার পাশাপাশি দৌড়ানো এবং অন্যান্য কার্ডিও ব্যায়াম করলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পুড়ে যায়, বিশেষ করে তলপেটে জমে থাকা চর্বি।

হরমোনের পরীক্ষা

তলপেটে মেদ বাড়তে থাকলে, হরমোনের সমস্যা থাকতে পারে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) বা অন্যান্য হরমোনজনিত সমস্যা হলে মেদ কমানো কঠিন হতে পারে। তাই, মেদের কারণে সমস্যা হলে একটি হরমোন পরীক্ষা করা জরুরি।

চিনিযুক্ত খাবার এড়ানো

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়গুলোর মধ্যে চিনিযুক্ত খাবার এড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত চিনি শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে মেদ জমার প্রবণতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে কোমরের আশেপাশে এবং তলপেটে চর্বি জমা হতে থাকে।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

খাবারে ফাইবার যোগ করলে তা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। ফাইবারের অভাবে শরীরে ফ্যাট জমে থাকে, তাই খাদ্য তালিকায় প্রচুর শাকসবজি এবং ফল রাখা উচিত।

স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমিয়ে ফেলা

ঘি, মাখনের মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে দ্রুত মেদ জমার কারণ হতে পারে। তাই তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর সহজ উপায় হিসেবে এসব ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বদলে বাদাম, অ্যাভোকাডো এবং ফ্যাটি মাছের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেতে পারেন।

নিয়মিত পানীয় গ্রহণ

শরীরের পানিশূন্যতা হলে বিপাকীয় কার্যকলাপ সঠিকভাবে হয় না। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। খাবারের আগে এক গ্লাস পানি খেলে ক্ষুধা কমে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা

নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তন পেটে মেদ জমার অন্যতম কারণ হতে পারে। বিশেষ করে ঋতুস্রাব বন্ধ হলে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরনের মাত্রা কমে গিয়ে তলপেটে মেদ জমতে শুরু করে। তাই হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম নিয়মিত করা উচিত।

হোল গ্রেইন গ্রহণ করা

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর ২৪টি সহজ ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে হোল গ্রেইন খাওয়া একটি কার্যকর উপায়। এটি দেহে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করে এবং পেটের মেদ কমায়।

ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ

ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে শরীরে মেদ জমার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত সূর্যের আলো গ্রহণ এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

এই উপায়গুলো মেনে চললে মহিলাদের পেটের মেদ বা ভুরি দ্রুত কমানো সম্ভব।

পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম

পেটের চর্বি কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর ব্যায়ামের একটি হলো হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT)। এটি স্বল্প সময়ে কঠোর অনুশীলনের মাঝে অল্প বিরতির সমন্বয়ে করা হয়। 

পেটের চর্বি বা ভুরি

HIIT এর মাধ্যমে দ্রুত ক্যালরি ক্ষয় করা যায় এবং নিয়মিত করলে পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব। পুশিং, পুলিং এবং ভার উত্তোলনের মতো অনুশীলনগুলো এই পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত থাকে। HIIT এর প্রতিটি সেশনে ৩০ সেকেন্ড অনুশীলনের পর ৩০ সেকেন্ড বিরতি নিতে হবে। এই ক্রমটি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করলে সর্বাধিক সুবিধা পাওয়া যায়।

লেগ রেইস

এই ব্যায়াম তলপেটের চর্বি কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পা দুটো একসঙ্গে ওপরে তুলতে হয়। পা নামানোর সময় মাটিতে লেগে যাবে না বরং কিছুটা উপরে থাকবে। এভাবে ১২ বার করে দুই সেট করা উচিত। নিয়মিত লেগ রেইস করলে পেটের তলদেশের চর্বি দ্রুত কমে।

ক্রাঞ্চেস

ক্রাঞ্চেস পেটের চর্বি কমানোর আরেকটি কার্যকর ব্যায়াম। মাদুরে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে শরীরটাকে তুলে হাঁটুর কাছে আনতে হবে। এভাবে মোট ১২ বার করে দুই সেট করতে হবে। ক্রাঞ্চেস পেটের পেশির সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

নি টু চেস্ট

নি টু চেস্ট ব্যায়ামটি বিশেষভাবে পেটের মাঝের অংশের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। শ্বাস ছাড়ার সময় পা দুটো বুকের কাছে এনে চেপে ধরতে হয়, তারপর ধীরে ধীরে পা সোজা করতে হয়। এভাবে ২-৩ সেট করা উচিত।

টো টাচ

এই ব্যায়ামটি পেটের ওপর কাজ করে এবং দ্রুত চর্বি কমাতে সহায়তা করে। প্রথমে বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল ছোঁয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। একইভাবে বাম হাত দিয়ে ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল ছোঁয়া যাবে। প্রতিদিন এই ব্যায়ামটি করলে তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব।

এছাড়া পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম হিসেবে সাইক্লিং, প্ল্যাঙ্ক এবং স্কোয়াটের মতো ব্যায়ামগুলোও খুবই কার্যকর। এই ব্যায়ামগুলো প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে করলে দ্রুত চর্বি বা ভুরি কমানো সম্ভব।

তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাসও বজায় রাখতে হবে।

প্ল্যাঙ্ক

প্ল্যাঙ্ক ব্যায়াম পেটের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। মেঝেতে উপুড় হয়ে দুই কনুই এবং পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে শরীরটিকে সোজা রেখা বরাবর ধরে রাখতে হবে। এ অবস্থায় অন্তত ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট থাকতে হবে। এটি নিয়মিত করলে তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।

মাউন্টেন ক্লাইম্বার

মাউন্টেন ক্লাইম্বার একটি কার্ডিও ব্যায়াম যা দ্রুত ক্যালরি ক্ষয় করে। এটি করার জন্য পুশআপ অবস্থানে থাকতে হবে, এরপর এক পা সামনে এনে হাঁটু বুকের দিকে টানতে হবে এবং বারবার পায়ের অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। এটি তাড়াতাড়ি পেটের চর্বি বা ভুরি কমানোর জন্য খুবই উপযোগী।

রাশিয়ান টুইস্ট

রাশিয়ান টুইস্ট পেটের পাশের চর্বি কমানোর জন্য দারুণ কার্যকর। এই ব্যায়াম করতে হলে মেঝেতে বসে হাঁটু ভাঁজ করে শরীরটিকে কিছুটা পেছনে হেলিয়ে দুই হাতে একটি বল বা কোনো ওজন নিয়ে ডান থেকে বাম দিকে ঘোরাতে হবে। এটি ১০-১৫ বার করে দুই সেট করা উচিত।

বার্পিস

বার্পিস একটি পূর্ণাঙ্গ শরীরচর্চা যা দ্রুত ক্যালরি ক্ষয় করে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এটি করতে প্রথমে দাঁড়িয়ে হাত মাটি স্পর্শ করে পুশআপ অবস্থানে যেতে হবে, তারপর পুশআপ করে পা আবার সামনে এনে লাফিয়ে ওঠা। এভাবে ১০-১৫ বার করে দুই সেট করতে হবে।

সাইকেল ক্রাঞ্চেস

সাইকেল ক্রাঞ্চেস ব্যায়ামে মাদুরে চিত হয়ে শুয়ে এক পা ভাঁজ করে আরেক পা সোজা করতে হবে এবং বিপরীত কনুই দিয়ে হাঁটুর দিকে স্পর্শ করতে হবে। এভাবে দ্রুত পায়ের অবস্থান পরিবর্তন করে করতে হবে। এটি পেটের মধ্য ও পাশের চর্বি দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

স্কোয়াটস

স্কোয়াট মূলত পায়ের জন্য উপকারী হলেও পেটের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে। দাঁড়িয়ে হাঁটু ভাঁজ করে নিচের দিকে বসার মতো করতে হবে এবং আবার উঠে দাঁড়াতে হবে। ১২-১৫ বার করে দুই সেট করলে এটি দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

লেখকের মন্তব্য

পেটের চর্বি দ্রুত কমাতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম অপরিহার্য। দ্রুত ফলের জন্য ধৈর্য এবং সতর্কতা প্রয়োজন। ঘরোয়া উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনার শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে পারবেন। তাই শুরু করুন আজই, এবং একটি সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url