মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি
বর্তমানে মাইগ্রেন একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে যার মূল উপসর্গ হলো তীব্র মাথাব্যথা। এই ব্যথার কষ্ট কখনও কখনও অসহনীয় হয়ে ওঠে যেখানে ওষুধ ছাড়া উপায় থাকে না। তবে অনেক সময় ওষুধও পর্যাপ্তভাবে কাজ করে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানো সম্ভব। তাই, মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ ছাড়াও মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে কিছু মানুষের মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে ব্যথা থাকে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে পুরো মাথাজুড়ে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওষুধ ছাড়াও কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বস্তি পাওয়া যায় তাই মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি প্রাকৃতিক উপায় এবং দ্রুত মুক্তির কার্যকর সমাধাট জানতে দ্রুত মূল আলোচনায় চলে যান।
ভূমিকা
মাইগ্রেনের ব্যথা আজকাল অনেকের জন্য একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। এই ব্যথা সাধারণত মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে যা দৈনন্দিন কাজকে কঠিন করে তোলে। ওষুধ সবার ক্ষেত্রে কার্যকর না হওয়ায়, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে। এজন্য মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা সহায়ক হতে পারে। সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে মাইগ্রেনের ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মাইগ্রেনের ব্যথা কি এবং কেন হয়
মাইগ্রেনের ব্যথা হলো এক ধরনের তীব্র ও কম্পনযুক্ত মাথাব্যথা যা সাধারণত মাথার একপাশে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি সাধারণ মাথাব্যথার চেয়ে অনেক বেশি জটিল ও কষ্টদায়ক। মাইগ্রেনের ব্যথা মাঝারি থেকে তীব্র হতে পারে এবং কখনো কখনো দৈনন্দিন কাজকর্মকে বাধাগ্রস্ত করে।
মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার আগে অনেক সময় শরীরে কিছু পূর্ব লক্ষণ দেখা দেয় যেমন দৃষ্টিভ্রম, চোখে ঝলকানি বা আলোর প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা। তবে মাইগ্রেনের পূর্বাভাস ছাড়াও ব্যথা শুরু হতে পারে যা সাধারণত মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে অনুভূত হয়।
মাইগ্রেনের ব্যথা প্রায়শই কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং এটি মাথার যেকোনো অংশে প্রভাব ফেলতে পারে, যদিও একপাশে ব্যথা বেশি লক্ষ্য করা যায়। মাইগ্রেনের আরেকটি ধরন আছে, যাকে বলা হয় সাইলেন্ট মাইগ্রেন। এ ধরনের মাইগ্রেন সমস্যায় পূর্ব লক্ষণ থাকলেও সাধারণত মাথাব্যথা দেখা যায় না।
তবে অন্যান্য উপসর্গ যেমন দৃষ্টিভ্রম বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা থাকতে পারে। মাইগ্রেন সমস্যা মূলত এক ধরনের জটিল মাথাব্যথা যা সাধারণ মাথাব্যথার চেয়ে অনেক বেশি তীব্র হয়। এই সমস্যার সময় মাথার একপাশে তীব্র কম্পনের মতো ব্যথা অনুভূত হয় যা ধীরে ধীরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মাইগ্রেন সমস্যার সময় শুধু ব্যথা নয়, দৃষ্টি বিভ্রম, বমি বমি ভাব বা আলোর প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতাও দেখা দিতে পারে। মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ হিসেবে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কার্যক্রম, হরমোনের ওঠানামা, শারীরিক ক্লান্তি, মানসিক চাপ এবং পরিবেশগত কারণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, কিছু নির্দিষ্ট খাবারও মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়াতে পারে।
মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ
মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কার্যক্রম: মাইগ্রেন সমস্যার পেছনে মস্তিষ্কের কার্যক্রমের পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহের অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন স্নায়ুর উত্তেজনা ঘটে যা মাথার তীব্র ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হরমোনজনিত পরিবর্তন: বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেন সমস্যার একটি বড় কারণ হলো হরমোনজনিত পরিবর্তন। মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের সময় হরমোনের ওঠানামা মাইগ্রেনের প্রকোপ বাড়াতে পারে।
শারীরিক কারণ: শারীরিক ক্লান্তি, ঘুমের অভাব বা মানসিক চাপও মাইগ্রেন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মানসিক চাপের কারণে স্নায়ু ও রক্তনালীতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় যা মাইগ্রেনের ব্যথা বৃদ্ধি করে।
পরিবেশগত কারণ: উজ্জ্বল আলো, উচ্চ শব্দ বা হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন মাইগ্রেনের উপসর্গকে উদ্দীপিত করতে পারে। মাইগ্রেন সমস্যার সময় এসব পরিবেশগত কারণগুলো অত্যন্ত প্রভাব ফেলে।
খাবার: কিছু নির্দিষ্ট খাবার যেমন ক্যাফেইন, চকলেট, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা অ্যালকোহল মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত মশলাদার খাবার বা খাবার পরিমাণে অনিয়ম মাইগ্রেন সমস্যা বাড়াতে পারে।
এগুলো ছাড়াও ব্যক্তিভেদে মাইগ্রেনের কারণ ভিন্ন হতে পারে, তবে এ সমস্যার প্রভাব অনেক ক্ষেত্রেই অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনের নিয়ম মেনে চললে মাইগ্রেন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মাইগ্রেন সমস্যার লক্ষণ
মাইগ্রেন সাধারণত কিশোর বয়সে বা ২০-এর দশকের শুরুর দিকে দেখা দিতে শুরু করে, তবে এটি যেকোনো বয়সে এমনকি শৈশবকালেও হতে পারে। তবে, ৫০ বছর বয়সের পর যদি মাইগ্রেন শুরু হয়, এটি মস্তিষ্কের কোনো অন্তর্নিহিত রোগের লক্ষণ হতে পারে। মাইগ্রেনের প্রবণতা প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বংশগত।
আরও পড়ুনঃ কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে নিয়মিত খেতে হবে যে ১৫টি খাবার।
মাইগ্রেন আক্রান্তদের মস্তিষ্কে হাইপারএক্সিটেবল নিউরোফিজিওলজিক্যাল প্রতিক্রিয়া দেখা যায় যা কিছু দৃশ্যমান এবং শ্রবণীয় উদ্দীপনার বৈদ্যুতিক প্রতিক্রিয়াকে দমন করতে অক্ষম হয়। অনেক মাইগ্রেন রোগী মাথাব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে একগুচ্ছ উপসর্গ বা "প্রোড্রোম" অনুভব করেন।
প্রোড্রোমের লক্ষণগুলোর মধ্যে হাঁচি, তরল জমা হওয়া, ফ্যাকাশে ভাব, বমি বমি ভাব, আলোতে অতিসংবেদনশীলতা, মেজাজের পরিবর্তন, দুঃখ বা বিরক্তির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। প্রোড্রোমের চিকিৎসা এবং মাইগ্রেন প্রতিরোধের চেষ্টা সীমিত ফলাফল দিয়েছে এ ধরনের চিকিৎসা থেকে মাত্র একটি ছোট অংশের রোগী সত্যিকারভাবে উপকৃত হয়।
শারীরিক ক্রিয়াকলাপ প্রায়ই ব্যথা এবং মাইগ্রেনের অন্যান্য উপসর্গগুলোকে আরও তীব্র করে তোলে নিচে মাইগ্রেন সমস্যার ১০টি প্রধান লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
তীব্র মাথাব্যথা
মাইগ্রেনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো তীব্র মাথাব্যথা। সাধারণত এই ব্যথা মাথার একপাশে অনুভূত হয়, তবে কখনও কখনও এটি মাথার উভয় পাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। মাইগ্রেনের ব্যথা মাঝারি থেকে অত্যন্ত তীব্র হতে পারে এবং প্রায়শই কম্পনের মতো অনুভূত হয়। এই ব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে তিন দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
দৃষ্টিভ্রম বা অরা
মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে অনেকের দৃষ্টিভ্রম হয় যা অরা নামে পরিচিত। এটি মাইগ্রেন শুরুর পূর্বে ঘটে এবং এতে চোখের সামনে ঝলকানি দেখা, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়া, অথবা চোখের সামনে কালো বিন্দু বা লাইন দেখা যেতে পারে। এই অরা সাধারণত ২০-৩০ মিনিট স্থায়ী হয় এবং মাইগ্রেনের ব্যথার পূর্বলক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়।
বমি বমি ভাব ও বমি
মাইগ্রেনের সময় অনেকেই বমি বমি ভাব অনুভব করেন এবং কিছু ক্ষেত্রে বমি হয়ে থাকে। এটি মাইগ্রেনের তীব্র ব্যথার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। বমি হওয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতাও দেখা দিতে পারে যা ব্যথার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা
মাইগ্রেনের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা। মাইগ্রেনের সময় উজ্জ্বল আলো বা সূর্যের আলো মাথাব্যথার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য মাইগ্রেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই অন্ধকার এবং শান্ত স্থানে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন।
শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা
মাইগ্রেনের সময় উচ্চ শব্দও ব্যথার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যখন কোনো স্থান উচ্চ শব্দযুক্ত হয়, তখন মাইগ্রেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা অত্যন্ত অস্বস্তি অনুভব করেন। শব্দের সংবেদনশীলতার কারণে মাইগ্রেন আক্রান্তরা সাধারণত শান্ত এবং নীরব পরিবেশ পছন্দ করেন।
ঘুমের সমস্যা
মাইগ্রেনের ব্যথা চলাকালীন ঘুমের সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যায় বা ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়। মাইগ্রেনের কারণে ঘুমের অভাব দেখা দিলে তা শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়।
অবসাদ ও ক্লান্তি
মাইগ্রেনের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে তা শরীরে অতিরিক্ত অবসাদ এবং ক্লান্তির সৃষ্টি করে। মাইগ্রেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত দুর্বলতা এবং শারীরিক শক্তি হ্রাস অনুভব করেন। এটি দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনে বাধা সৃষ্টি করে এবং তাদের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
মনোযোগের ঘাটতি
মাইগ্রেনের আরেকটি লক্ষণ হলো মনোযোগের ঘাটতি। মাইগ্রেনের সময় মস্তিষ্কের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয় যা মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে অসুবিধা তৈরি করে। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়া, স্মৃতিশক্তি এবং কাজের প্রতি মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তন
মাইগ্রেনের সময় অনেকের শরীরে তাপমাত্রার পরিবর্তন দেখা যায়। কখনো শরীর খুব গরম বা খুব ঠাণ্ডা অনুভূত হতে পারে। এটি মাইগ্রেনের এক ধরনের শারীরিক প্রতিক্রিয়া এবং এ কারণে শরীরে অস্বস্তি তৈরি হয়।
গন্ধের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা
মাইগ্রেনের সময় গন্ধের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট গন্ধ মাইগ্রেনের ব্যথা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে তীব্র সুগন্ধি বা রাসায়নিকের গন্ধ মাইগ্রেন আক্রান্তদের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে।
মাইগ্রেনের লক্ষণগুলো অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং এটি ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারে। তবে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায়
মাইগ্রেন সমস্যা একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত কষ্টদায়ক ব্যাধি যা মাথায় তীব্র ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করে। মাইগ্রেনের সমস্যা বিভিন্ন কারণেই হতে পারে, যেমন স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাস, হরমোনের পরিবর্তন ইত্যাদি। তবে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে যা প্রাকৃতিক এবং দ্রুত মুক্তি প্রদান করতে সক্ষম। এখানে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো,
আরও পড়ুনঃ নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬টি সহজ উপায়।
শীতল প্যাক বা ঠাণ্ডা কাপড় ব্যবহার: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর সবচেয়ে প্রচলিত এবং কার্যকর পদ্ধতি হলো মাথার পেছনে বা কপালে ঠাণ্ডা প্যাক রাখা। এটি মাথার রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
হাইড্রেশন বজায় রাখা: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে মাইগ্রেন সমস্যা অনেকাংশে কমানো যায়। শরীর যখন ডিহাইড্রেট হয়, তখন মাথার ব্যথা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।
ম্যাসাজ: মাথার এবং ঘাড়ের হালকা ম্যাসাজ করলে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়। ম্যাসাজ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করে।
ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ: ধ্যান এবং নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে শান্ত করা যায়, যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
অন্ধকার ও নিরব পরিবেশে বিশ্রাম: মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে তীব্র আলো এবং শব্দ। অন্ধকার এবং নিরব পরিবেশে বিশ্রাম নিলে ব্যথা কমে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন: স্ট্রেস কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম মাইগ্রেন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
ম্যাসাজ তেল ব্যবহার: ল্যাভেন্ডার, পিপারমিন্ট এবং ইউক্যালিপটাস তেলের ব্যবহার মাইগ্রেন সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এগুলোর শীতল প্রভাব ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
খাবারের প্রতি সতর্কতা: চকলেট, ক্যাফেইন এবং চিজ মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়াতে পারে। সঠিক খাবার নির্বাচন করলে মাইগ্রেন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল: উষ্ণ পানির গোসল শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আদা চা: আদার প্রদাহনাশক গুণ মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
উপরোক্ত উপায়গুলো মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে। তবে, যদি মাইগ্রেন সমস্যা খুব গুরুতর হয় বা নিয়মিত হয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মাইগ্রেন সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি
মাইগ্রেন সমস্যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক এবং কষ্টদায়ক হতে পারে। এই সমস্যার ফলে মাথায় তীব্র ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে। তবে, প্রাকৃতিক উপায়ে মাইগ্রেন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এখানে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতিসমুহ নিয়ে আলোচনা করা হলো,
পিপারমিন্ট অয়েল: পিপারমিন্ট অয়েল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে শীতল প্রভাব সৃষ্টি হয়, যা মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
ল্যাভেন্ডার তেল: ল্যাভেন্ডার তেলের সুঘ্রাণ মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি বাতাসে ছড়িয়ে বা সরাসরি ত্বকে ম্যাসাজ করে মাইগ্রেনের ব্যথা হ্রাস করা যেতে পারে।
দারুচিনি: দারুচিনি পেস্ট করে কপালে লাগালে মাইগ্রেন সমস্যা কমতে পারে। এটি মাথার ব্যথা এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।
ব্রিদিং এক্সারসাইজ: নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাস মস্তিষ্ককে শিথিল করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা হ্রাস হয়।
ম্যাসাজ: ঘাড় ও মাথার ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা মাইগ্রেন সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ম্যাসাজ শিথিলতা এনে দেয় এবং ব্যথা কমায়।
ভিটামিন বি২ গ্রহণ: রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি২) মাইগ্রেন প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি নিয়মিত গ্রহণ করলে মাইগ্রেনের তীব্রতা কমতে পারে।
ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট: ম্যাগনেসিয়ামের অভাব মাইগ্রেন সমস্যা বাড়াতে পারে। নিয়মিত ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
ক্যামোমিল চা: ক্যামোমিল চা শিথিলতার সৃষ্টি করে এবং মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এর প্রদাহনাশক গুণাগুণ মাথার ব্যথা কমাতে কার্যকর।
অন্ধকারে বিশ্রাম: মাইগ্রেন সমস্যা তীব্র হলে আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। তাই, অন্ধকার ও নীরব পরিবেশে বিশ্রাম নেওয়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
হাইড্রেটেড থাকা: পর্যাপ্ত পানি পান করলে মাইগ্রেন সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। ডিহাইড্রেশনের কারণে মাইগ্রেন বাড়তে পারে, তাই পানি খাওয়া জরুরি।
হলুদ: হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক। হলুদ দিয়ে চা তৈরি করে পান করলে এটি ব্যথা হ্রাসে কার্যকর হতে পারে।
ইউক্যালিপটাস তেল: এই তেলের শীতল প্রভাব মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে পারে। মাথায় হালকা ম্যাসাজ করলে এটি আরাম দেয় এবং ব্যথা লাঘব করে।
শীতল কম্প্রেস: মাথার পেছনে বা কপালে শীতল কম্প্রেস রাখলে রক্তনালীগুলির সংকোচন ঘটে এবং মাইগ্রেনের ব্যথা কমে।
রোজমেরি তেল: রোজমেরি তেল ম্যাসাজ করলে মাথার পেশীগুলো শিথিল হয় এবং মাইগ্রেন সমস্যা হ্রাস পায়।
এই ১৫টি প্রাকৃতিক পদ্ধতি মাইগ্রেন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কার্যকর হতে পারে। যদিও এসব পদ্ধতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্যকর হয়, তবে যেকোনো উপসর্গের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সর্বোত্তম। মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি বিষয়ে এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
মাইগ্রেনের সমস্যা জীবনকে অসহ্য করে তুলতে পারে, তবে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এর সমাধান সম্ভব। মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ১০টি কার্যকর উপায় ও দ্রুত মুক্তির প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে অনেকাংশে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসা মাইগ্রেনের ব্যথা হ্রাস করতে পারে।
তবে গুরুতর মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। পাঠক আজকের পোস্টটি যদি আপনাদের ভাল লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করুন, ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url