বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনায় এই বিষয়ে আপনাদের সম্যক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে তাই কোন অংশ বাদ না দিয়ে পুরোটা খুব ভালভাবে পড়বেন।     
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি- ২০টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি যা আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত সফলতার দিকে নিয়ে যাবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে দ্রুত মূল আলোচনায় চলে যান। 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি?

বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের মানুষ এই পেশার মাধ্যমে নিজেদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলছে। এর মূল কারণ হলো ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা, যেখানে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। 

যত দিন যাচ্ছে, মানুষ ধীরে ধীরে অনলাইনমুখী হয়ে উঠছে। ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বা সেবা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডিজিটাল মাধ্যমকে বেছে নিচ্ছেন যা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদাকে প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে তুলছে।


ফ্রিল্যান্সিং জগতে বিভিন্ন সেক্টর যেমন ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও প্রোডাকশন ইত্যাদি আলাদা আলাদা কাজ হিসেবে জনপ্রিয়। তবে, প্রতিটি কাজের শেষে পণ্য বা কনটেন্টকে মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

এখানে নিজের ইচ্ছা এবং পছন্দমতো কাজ বেছে নেওয়া যায় যা অনেকের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তবে ফ্রিল্যান্সিং থেকে সফলতা পেতে হলে, সঠিক সেক্টর চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী দক্ষতা অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করার সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টরগুলো হল,  
  • এসইও কনসালট্যান্ট : ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে কাজ করা।
  • লিড জেনারেশন : ব্যবসার জন্য সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করা।
  • কিওয়ার্ড রিসার্চ : উপযুক্ত কিওয়ার্ড নির্বাচন করে কন্টেন্ট বা ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা।
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট : দূরস্থান থেকে বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং ব্যক্তিগত সহায়তা প্রদান করা।
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং: ভাল মানের কন্টেন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের আকর্ষণ করা।
  • ড্রপ শিপিং: ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির সহজ উপায়।
  • ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট : ওয়ার্ডপ্রেস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরিতে পারদর্শী।
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং : সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার।
  • রিজিউম এবং কভার লেটার লেখক : পেশাদার রিজিউম এবং কভার লেটার প্রস্তুতের দক্ষ সেবা।
  • বুক ডিজাইনার: বইয়ের কাভার এবং অভ্যন্তরীণ ডিজাইন তৈরির কাজ।
  • ই-বুক লেখক: ইলেকট্রনিক বই লেখার ক্ষেত্রে দক্ষতা।
  • ঘোস্ট রাইটার: অন্যদের পক্ষে লেখা প্রস্তুত করা।
  • ইমেল মার্কেটিং: ইমেল ব্যবহার করে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের কাছে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা।
  • মার্কেট রিসার্চার: বাজারের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ।
  • এডিটর : লেখা সম্পাদনা এবং মান যাচাইয়ের কাজ।
  • ভিডিও মার্কেটিং: ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে ব্র্যান্ড বা পণ্যের প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা।
  • ফিকশন লেখক: সৃজনশীল গল্প বা উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে দক্ষতা।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং: কমিশনের ভিত্তিতে পণ্য বা সেবা প্রচার।
  • কার্টুন আর্টিস্ট: কার্টুন এবং অ্যানিমেশন তৈরির সৃজনশীল কাজ।
উপরোক্ত সেক্টরগুলোর মধ্যে আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতা অনুযায়ী একটি সেক্টর নির্বাচন করুন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করুন। এভাবেই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফল হওয়া সম্ভব।

আউটসোর্সিং কি? আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি? ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি 

আউটসোর্সিং হলো একটি স্বাধীন পেশা যা একইসঙ্গে ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ার অংশও। এর মাধ্যমে একটি কোম্পানি তার নিজস্ব কাজ বা সেবা পরিচালনার জন্য বিশ্বব্যাপী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে থাকে। 

সহজ কথায়, এমন কাজ যা আগে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্মীরা করতেন এখন তা বহিরাগত বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সম্পন্ন করা হয়। এই ব্যবস্থায় কোম্পানি নিজস্ব কর্মচারীদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের দক্ষ কর্মীদেরও কাজে লাগিয়ে থাকে।

আসলে আউটসোর্সিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এটি ফ্রিল্যান্সিংয়ের মতোই একটি মুক্ত পেশা, যেখানে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করা যায় এবং আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। 

আউটসোর্সিংকে একটি বড় গাছের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে যার রয়েছে অসংখ্য শাখা-প্রশাখা। এই শাখাগুলোর প্রতিটি একেকটি বিশেষায়িত কাজের দিক নির্দেশ করে।

বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের সম্ভাবনাময় কিছু কাজ নিম্নরূপ:
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ভিডিও এডিটিং
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • ওয়েবসাইট ডিজাইন
  • অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
  • ডাটা এন্ট্রি
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
  • ভয়েস ওভার
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
  • ডাটা এনালাইসিস
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স
  • ট্রান্সলেশন
  • ইউএক্স/ইউআই ডিজাইন
  • ট্রান্সক্রাইবিং
  • সেলস ও মার্কেটিং
  • কাস্টমার সার্ভিস
  • কপিরাইটিং
  • অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস
  • ওয়েবসাইট মেইনটেনেন্স
  • ক্রিয়েটিভ ডিজাইন
  • রিমোট অফিস অ্যাসিস্ট্যান্স
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে এই কাজগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি বা একাধিক ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কেটপ্লেসগুলোতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং ভবিষ্যতে কোন কাজের গুরুত্ব বাড়বে তা বিশ্লেষণ করে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। সঠিক দিকনির্দেশনা ও দক্ষতার সমন্বয়ে আউটসোর্সিং থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আয় করা সম্ভব।

আউটসোর্সিং-এর সুবিধা ও অসুবিধা

আউটসোর্সিং-এর সুবিধা

  • দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি: একজন ফ্রিল্যান্সার যখন বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য একই ধরনের কাজ বারবার করেন, তখন তার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অনেকগুণ বাড়ে। এই প্রক্রিয়ায়, একজন ফ্রিল্যান্সার একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করে দ্রুত নিজের কাজের গুণমান উন্নত করতে সক্ষম হন।
  • খরচ কম: আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট কর্মচারী নিয়োগের পরিবর্তে অল্প খরচে কাজ করিয়ে নিতে পারে। অফিস পরিচালনার জন্য স্থায়ী কর্মী বা ইনফ্রাস্ট্রাকচারের প্রয়োজন না হওয়ায় এই পদ্ধতি খরচ সাশ্রয়ী।
  • নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন: ফ্রিল্যান্সাররা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করে ক্লায়েন্টকে জমা দেওয়ার জন্য দায়বদ্ধ। এর ফলে ক্লায়েন্ট নির্ধারিত সময়ে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ পেয়ে যান এবং ব্যবসার কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে পারেন।
  • স্বাধীন কাজের পরিবেশ: ফ্রিল্যান্সাররা নিজের সময় ও কাজের নিয়ম নির্ধারণ করতে পারেন। তারা যে কোনো সময়, যে কোনো স্থান থেকে কাজ করতে সক্ষম এবং নিজেদের ইচ্ছামতো বিরতি নিতে পারেন।

আউটসোর্সিং-এর অসুবিধা

  • গোপনীয়তার ঝুঁকি: যেহেতু ফ্রিল্যান্সাররা নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী নন এবং বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করেন, তাই অনেক সময় কোম্পানির গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রতিযোগী কোম্পানিরাও এই তথ্য কাজে লাগাতে পারে।
  • অদক্ষ ফ্রিল্যান্সার থেকে ক্ষতি: অনেক সময় ক্লায়েন্টরা দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন। এতে কাজের গুণগত মান কমে যায় এবং কোম্পানিকে লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
  • ব্যবসা পরিচালনার জটিলতা: ফ্রিল্যান্সাররা নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে ক্লায়েন্টের নেতিবাচক রিভিউ পাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ফলে ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইলের রেটিং কমে যায় এবং ভবিষ্যতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে। একইসঙ্গে ক্লায়েন্টের ব্যবসা পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেয়।
উল্লেখিত সুবিধা এবং অসুবিধা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, আউটসোর্সিং-এর সুবিধাগুলো অসুবিধার তুলনায় অনেক বেশি। সঠিক পরিকল্পনা ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ পরিচালনা করলে উভয় পক্ষই লাভবান হতে পারে। তাই ক্লায়েন্ট এবং ফ্রিল্যান্সারদের নিজেদের দায়িত্ব এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করা উচিত, যাতে আউটসোর্সিং আরও সফল হয়।

২০টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর এবং জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাজার হাজার অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম বেশ জনপ্রিয়, যেখানে কাজের সুযোগ বেশি থাকে। সাধারণত, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি মার্কেটপ্লেস হিসেবে পরিচিত, যেখানে ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্ট একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। 
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি- ২০টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
মার্কেটপ্লেসে, ক্লায়েন্ট তার কাজের বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করেন এবং ফ্রিল্যান্সাররা সেই কাজ দেখে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজটি করতে আগ্রহী হন।

১. Fiverr.com 

এটি হলো একটি অত্যন্ত সুবিধাজনক ওয়েবসাইট যা আউটসোর্সিং করার জন্য বেছে নেওয়া যায়। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই ওয়েবসাইটটি জনপ্রিয়তার দিক থেকে তেমন উচ্চতায় ছিল না তবে এখন এটি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে একটি। 

বাংলাদেশের অনেক ফ্রিল্যান্সার Fiverr-এ কাজ করে থাকেন। Fiverr-এর জনপ্রিয়তার একটি বড় কারণ হলো এখানে ছোট থেকে বড় সব ধরনের প্রজেক্ট পাওয়া যায়। যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে নতুন, তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত অপশন। 

Fiverr-এ প্রাইসিং শুরু হয় মাত্র ১৫ ডলার থেকে এবং এখানে প্রায় সকল ধরনের অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত কাজ পাওয়া যায়। এই প্ল্যাটফর্মটি ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে Shai Wininger এবং Micha Kaufman দ্বারা চালু করা হয়েছিল। 

২. Guru.com

গুরু (Guru) একটি প্রাচীন ও আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যা জনপ্রিয় অন্যান্য মার্কেটপ্লেসগুলোর মতোই বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য পরিচিত। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, রাইটিং, ভিডিও এডিটিংসহ অনেক ধরনের কাজ করা হয়। 

গুরুতে, আপওয়ার্কের মতোই, বায়াররা তাদের কাজের বিবরণ পোস্ট করে এবং ফ্রিল্যান্সাররা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেই কাজটি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। তারপর বায়ার তার পছন্দের ফ্রিল্যান্সার নির্বাচন করেন। এখানে দুই ধরনের কাজের পদ্ধতি রয়েছে ফিক্সড পদ্ধতি এবং ঘন্টা ভিত্তিক পদ্ধতি। 

গুরু মার্কেটপ্লেসটি কঠোর নিয়মাবলী অনুসরণ করে, যার কারণে এখানে স্প্যাম কম থাকে। পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে গুরুতে পেওনিয়ার, পেপাল, ট্রান্সফার এবং ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায়। গুরু একটি খুব পুরনো প্ল্যাটফর্ম, যা ১৯৯৯ সালে দুই ভাই জন এবং জেমস Slavet দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

৩. iWriter.com

iWriter একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বৃহত্তম ওয়েবসাইট যা ২০১১ সালে চালু হয়। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মূলত এটি ফ্রিল্যান্স লেখকদের জন্য একটি প্রধান মার্কেটপ্লেস, যেখানে ব্লগাররা নিবন্ধ লেখার সুযোগ পায়। প্রতিটি নিবন্ধ লেখার জন্য রাইটাররা $১৫ পর্যন্ত আয় করতে পারেন।

৪. Upwork.com

প্রথমে ওডেক্স নামে পরিচিত ছিল যা পরবর্তীতে ২০১৫ সালে আপওয়ার্ক নামে নাম পরিবর্তন করে। Upwork ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পেশাদার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত। এখানে অধিকাংশ ক্লায়েন্ট পেশাদার হওয়ার কারণে, অল্প কাজের জন্যও অনেক ভালো সুবিধা পাওয়া যায়। 

Upwork-এ কাজ পেতে, আপনাকে কানেক্টের মাধ্যমে প্রপোজাল পাঠাতে হয় এবং এরপর ক্লায়েন্ট প্রপোজালগুলো দেখে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের নির্বাচন করে। এখানে ছোট থেকে বড় সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়। যারা অনলাইনে আয় করতে চান এবং যদি আপনার দক্ষতা থাকে, তাহলে Upwork আপনার জন্য একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। 

Upwork-এ মূলত প্রজেক্ট এবং ঘণ্টা ভিত্তিক কাজ পাওয়া যায়। বায়াররা নির্ধারণ করে যে কোন কাজ কত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজের জন্য এককালীন পেমেন্ট দেওয়া হয়, তবে ঘণ্টাভিত্তিক কাজে একটি নির্দিষ্ট রেটে পেমেন্ট প্রদান করা হয়। 

Upwork প্রতিষ্ঠা করেন গ্রিক উদ্যোক্তা Odysseas Tsatalos এবং Stratis ২০০৩ সালে। প্রতিবছর, Upwork-এ ক্লায়েন্টরা প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রজেক্ট পোস্ট করেন।

৫. Elance.com

অ্যালেন্স হলো একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং জনপ্রিয় ওয়েবসাইট যা বিভিন্ন প্রোগ্রামার, লেখক এবং অভিজ্ঞ ডিজাইনারদের জন্য পরিচিত। এখানে আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের খুঁজে পাবেন যারা আপনার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম। যদি আপনি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাজ করতে চান তবে অ্যালেন্স নির্বাচন করা হবে একটি স্মার্ট সিদ্ধান্ত। 

প্রথমে, আপনাকে অ্যালেন্সে কাজের বিবরণ প্রদান করতে হবে এবং সেখানে প্রার্থীদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং পারিশ্রমিকের তথ্য দিতে হবে। এরপর অ্যালেন্স আপনার চাহিদা অনুযায়ী কাজটি সম্পাদন করবে। 

অ্যালেন্স প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে এবং ২০১৩ সালে এটি ওডেক্সের সঙ্গে একীভূত হয়। বর্তমানে, অ্যালেন্স ২০১৫ সাল থেকে আপওয়ার্কের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে এবং এখনকার সব কাজ আপওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে।

৬. SolutionInn.com

বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সল্যুশনইন ডটকম নিজের স্থান তৈরি করছে। অন্যান্য ওয়েবসাইটের তুলনায় সল্যুশনইন ডটকম নতুন এবং এর মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে নতুনদের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। 

যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান, যেমন শিক্ষার্থী বা সদ্য শিক্ষা জীবন শেষ করা চাকরিজীবী, তাদের জন্য সল্যুশনইন ডটকম একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। এই সাইটে নতুনদের দিয়ে কাজ করানোর মানে এই নয় যে কাজের মান খারাপ হবে বরং নতুন ফ্রিল্যান্সাররা দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের তত্ত্বাবধানে কাজ করে, যার ফলে ক্লায়েন্টের প্রকল্প নিখুঁতভাবে সম্পন্ন হয় এবং নতুন ফ্রিল্যান্সাররা তাদের ভুল শোধরানোর সুযোগ পায়।

৭. Freelancer.com

ফ্রিল্যান্সার ডটকম একটি পুরনো এবং প্রথম সারির অনলাইন জব মার্কেটপ্লেস, যেখানে প্রচুর পরিমাণে অনলাইন কাজ পাওয়া যায়। এখানে সাধারণত ফিক্সড প্রাইস এবং আওয়ারলি প্রজেক্ট বেশি পাওয়া যায়। ফাইভার ও আপওয়ার্কের তুলনায় এখানে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম তবে এটি ১৮০০টিরও বেশি ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরি অফার করে। 

বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মে ১০,০০০,০০০ এরও বেশি জব পোস্ট করা রয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে সারা বিশ্বে সফলতার সাথে কাজ করে আসছে ফ্রিল্যান্সার ডটকম। অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের মতো এখানে ফিক্সড এবং ঘন্টা ভিত্তিক কাজ পাওয়া যায়, তবে এর একটি বিশেষ দিক হলো নিয়মিত কন্টেস্টের আয়োজন। 

বিভিন্ন কন্টেস্টের মাধ্যমে, ক্লায়েন্ট যাদের কাজ বেশি পছন্দ করেন, তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয় এবং বিজয়ী প্রজেক্টের পুরো পেমেন্ট পেয়ে থাকেন।

৮. 99 Desings.com

ফ্রিল্যান্স ডিজাইনারদের জন্য ৯৯ ডিজাইন একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। এখানে শুধুমাত্র গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কিত কাজ পাওয়া যায়, যার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ডিজাইন, ওয়েব পেজ ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, টি শার্ট ডিজাইন, বুক কভার ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন এবং প্রোডাক্ট প্যাকেজিংসহ অন্যান্য গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ অন্তর্ভুক্ত। 

৯৯ ডিজাইন একটি বিশেষ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ক্লায়েন্ট তাদের ডিজাইন চাহিদা নিয়ে একটি জব পোস্ট করেন। ডিজাইনাররা সেই পোস্ট দেখে তাদের ডিজাইন ক্লায়েন্টের ইনবক্সে সাবমিট করে। তবে, পেমেন্ট শুধুমাত্র সেই ডিজাইনারকেই দেওয়া হয়, যার ডিজাইন ক্লায়েন্টের পছন্দ হয়। 

অন্যান্য ডিজাইনার যারা তাদের কাজ সাবমিট করেছেন, তারা কোন পেমেন্ট পান না। প্রতিটি ডিজাইন প্রকল্পের জন্য ডিজাইনাররা সাধারণত $২৫০ থেকে $৪০০ পর্যন্ত উপার্জন করেন।

৯. Dribble.com

ড্রিবল ডটকম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার মার্কেটপ্লেস, যেখানে কাজের জন্য প্রবেশ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন দক্ষ ডিজাইন স্পেশালিস্ট হতে হবে। অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের তুলনায় ড্রিবল ডটকমের কার্যক্রম কিছুটা ভিন্ন। এখানে কাজ শুরু করতে হলে প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং পরে একটি প্রফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। 

এরপর একটি জব বোর্ড তৈরি করে সেখানে আপনার সেরা ডিজাইনগুলো আপলোড করতে হবে। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মে বায়াররা নিজে তাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন খুঁজে বের করে এবং সেটি ক্রয় করে। 

এছাড়া, এখানে কম্পিটিশন কমাতে আপনি আপনার কাজের জন্য নির্দিষ্ট লোকেশন নির্বাচন করতে পারেন। তাই, যদি আপনি এই ক্ষেত্রে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হন, তবে সহজেই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

১০. Aquent.com

একুয়েন্ট ডটকম (Aquent.com) অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের মতোই একটি সম্ভাবনাময় প্ল্যাটফর্ম, তবে এর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এখানে এককভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হলে আপনাকে একটি দক্ষ টিম গঠন করতে হবে কারণ এখানে আসা অধিকাংশ প্রজেক্টই গ্রুপ ভিত্তিক। 

যদি আপনি Aquent.com-এ যোগ দিতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে আপনার একটি সক্ষম ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপ রয়েছে এবং আপনার কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা যাচাই-বাছাই করা হবে। 

যদিও আপনি এককভাবে Aquent.com-এ অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন, তবে প্রজেক্ট নিবন্ধন করার সময় তারা আপনাকে কোনও গ্রুপে যোগ করে দেবে এবং তারপর আপনি সেই গ্রুপে কাজ শুরু করতে পারবেন।

১১. Toptal.com

Toptal.com একটি জনপ্রিয় প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেস, যা সমস্ত প্রক্রিয়া প্রফেশনাল এবং সুষ্ঠু পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হতে হবে। Toptal.com-এ একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে স্ক্রিনিং সহ বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই পেরিয়ে যেতে হবে। 

তারা আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পূর্ণ যাচাই করে তারপর আপনাকে প্ল্যাটফর্মে অ্যাক্সেস প্রদান করবে। Toptal.com-এর বিশেষত্ব হলো, এখানে ক্লায়েন্টদের পছন্দের ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করেন, এবং এই মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্ট পাওয়া সাধারণত সহজ। Toptal.com বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন থেকে বাছাই করে শুধুমাত্র সবচেয়ে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের নির্বাচন করে।

১২. Simply Hired.com

Simply Hired.com কে কাজের সমুদ্র হিসেবে পরিচিত বলা হয়। এই মার্কেটপ্লেসে কাজ পোস্ট করা কিংবা কাজ সম্পন্ন করার জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হয় না, যার ফলে ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ পোস্ট করতে কোনো বাধা থাকে না। এর ফলে Simply Hired.com এ কাজের অভাব কখনো হয় না। যদি আপনি চার্জ ছাড়া বেশি বেশি কাজ করতে চান, তাহলে Simply Hired.com একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

১৩. People Per Hour.com

People Per Hour.com ২০০৭ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল এবং তাদের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মে ৩ মিলিয়নেরও বেশি দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছেন। People Per Hour.com মার্কেটপ্লেসে প্রায় সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়, তবে এর একটি বিশেষ সুবিধা হলো আপনি এখানে আপনার নিজস্ব সার্ভিস বিক্রি করতে পারেন। 

এর মানে হলো, ক্লায়েন্টদের পোস্ট করা কাজে আবেদন করার পাশাপাশি আপনি নিজের সার্ভিসও সরাসরি বিক্রি করতে পারবেন।

১৪. People Per Hour.com

People Per Hour.com ২০০৭ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তারা সফলভাবে তাদের প্রোডাক্টিভিটি বজায় রেখেছে। বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মে ৩ মিলিয়নেরও বেশি অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছেন। People Per Hour.com এর মার্কেটপ্লেসে প্রায় সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়। 

তবে এই সাইটটির একটি বিশেষ সুবিধা হলো, এখানে আপনি শুধুমাত্র ক্লায়েন্টের পোস্ট করা কাজের জন্য আবেদন করার পাশাপাশি, নিজের সার্ভিসও সরাসরি বিক্রি করতে পারেন।

১৫. Seoclerks.com

যদি আপনার এসইও সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান থাকে, তাহলে এই ওয়েবসাইটটি আপনার জন্য একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে। এখানে কাজ করে আপনি ছোট ব্যবসা মালিকদের জন্য এসইও প্যাকেজ অফার করতে পারেন এবং তারা আপনাকে এই কাজে নিয়োগ দিতে পারে।

১৬. Getacoder.com

এই ওয়েবসাইটটি একটি সংকেত পদ্ধতির রচয়িতার এবং আপনার পরবর্তী প্রকল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এটি ডেভেলপার, ডিজাইনার এবং লেখকদের জন্য একটি আদর্শ মার্কেটপ্লেস, যেখানে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার সুযোগ পাবেন। এই মার্কেটপ্লেসটি মূলত ফ্রিল্যান্সার ডিজাইনার, প্রোগ্রামার এবং লেখকদের জন্য একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করে।

১৭. Mturk.com

Mturk.com হলো একটি চমৎকার অনলাইন মার্কেটপ্লেস, যেখানে বিশেষভাবে কলেজ ছাত্ররা এবং যারা পার্টটাইম অনলাইন কাজ করতে চান, তারা সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো কাজ করে আয় করতে পারবেন।

১৮. TaskRabbit

TaskRabbit একটি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে ক্লায়েন্টরা দৈনন্দিন কাজ, যেমন মুভিং, ক্লিনিং, এবং মেরামতের জন্য ফ্রিল্যান্সারদের ভাড়া করতে পারেন। এখানে ফ্রিল্যান্সাররা, যাদের "টাস্করাবিটার" বলা হয়, বিভিন্ন ধরণের কাজ সম্পাদন করেন। 

ব্যবহারকারীরা তাদের শহরের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজের জন্য সহায়ক খুঁজে পেতে পারেন, এবং কাজটি সম্পন্ন হলে রেটিং ও রিভিউ দিতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্মটি স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়, যেখানে টাস্করাবিটাররা তাদের সময় ও স্থান অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।

TaskRabbit নিরাপত্তা এবং পেমেন্ট সিস্টেম নিশ্চিত করে যাতে লেনদেন সুরক্ষিত থাকে। এটি নতুন কাজের সুযোগ ও দৈনন্দিন কাজের জন্য একটি দ্রুত এবং সহজ সমাধান প্রদান করে।

১৯. We Work Remotely

We Work Remotely একটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস যেখানে শুধুমাত্র দূরবর্তী (remote) কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। এই প্ল্যাটফর্মটি সারা বিশ্বব্যাপী চাকরি খোঁজার জন্য একটি আদর্শ স্থান, যেখানে প্রযুক্তি, ডিজাইন, মার্কেটিং, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের কাজ পাওয়া যায়। এখানে কোনো নির্দিষ্ট দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ফলে বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সাররা আবেদন করতে পারেন। 

এটি প্রফেশনালদের জন্য একটি সুরক্ষিত এবং পেশাদার প্ল্যাটফর্ম, যেখানে রিক্রুটাররা তাদের চাকরি পোস্ট করতে পারেন এবং প্রার্থীরা সরাসরি আবেদন করতে পারেন। We Work Remotely এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজের জন্য বেশি স্বাধীনতা ও নমনীয়তা পেতে পারেন। এটি মূলত দূরবর্তী কর্মীদের জন্য একটি সুবিধাজনক মার্কেটপ্লেস।

২০. SolidGigs

SolidGigs একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যা বিশেষভাবে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কাজের সুযোগ প্রদান করে। এটি বিভিন্ন শিল্পের জন্য নতুন কাজের তালিকা সরবরাহ করে, যা কিউরেটেড এবং প্রফেশনালভাবে নির্বাচিত হয়। SolidGigs-এর উদ্দেশ্য হল ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সময় বাঁচানোর মাধ্যমে দ্রুততম উপায়ে তাদের জন্য উপযুক্ত কাজ খুঁজে দেওয়া। 

এখানে মূলত টেম্পোরারি, প্যার্ট-টাইম এবং পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ রয়েছে। এটি প্রতিদিন নতুন কাজের ঘোষণা প্রদান করে, যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। SolidGigs প্রো-ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য এবং দক্ষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন

সঠিক সরঞ্জাম নিশ্চিত করুন: ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থাকা জরুরি। যদিও স্মার্টফোন দিয়েও কাজ শুরু করা যায়, তবে পেশাদার মানের কাজের জন্য ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ অধিক কার্যকর।
আপনার কাজের ধরন নির্ধারণ করুন: কোন ধরণের কাজ করতে চান তা ঠিক করুন। আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজের একটি তালিকা তৈরি করুন। ক্লায়েন্টের জন্য উপযোগী এবং অর্থ প্রদানে উৎসাহী এমন সেবাগুলোতে মনোযোগ দিন।
দক্ষতা বৃদ্ধি করুন: নিজের দক্ষতা উন্নত করতে নিয়মিত চর্চা করুন। ব্লগিং, গ্রাফিক ডিজাইন বা কন্টেন্ট রাইটিংয়ের মতো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ভালো পারদর্শিতা অর্জনের জন্য অনলাইন কোর্স, ইউটিউব ভিডিও এবং বইয়ের সাহায্য নিন।
উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন: ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন। জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস যেমন Upwork, Fiverr বা Toptal-এর পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় তুলনামূলক কম প্ল্যাটফর্মও বিবেচনায় রাখতে পারেন।
প্রোফাইল তৈরি করুন: একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করুন যেখানে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং বিশেষজ্ঞতার বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে। এতে সংক্ষেপে কিছু উদাহরণ দিয়ে নিজের কাজের মান তুলে ধরুন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন: আপনার কাজগুলো প্রদর্শনের জন্য একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন। এটি একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজ হতে পারে যেখানে আপনি আপনার সেরা কাজগুলো দেখাতে পারবেন।
পার্টটাইম হিসেবে শুরু করুন: ফ্রিল্যান্সিং পুরোপুরি ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণের আগে পার্টটাইম হিসেবে শুরু করুন। প্রতিদিন কিছু সময় ব্যয় করে ছোট ছোট কাজ নিন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করুন।
সঠিক মূল্য নির্ধারণ করুন: কাজের জন্য সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা শুরুর দিকে কঠিন হতে পারে। নতুন অবস্থায় অভিজ্ঞদের তুলনায় কম দাম চেয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতার সঙ্গে মূল্য বাড়ান।
প্রথম ক্লায়েন্ট খুঁজুন: একটি প্রাসঙ্গিক কভার লেটার তৈরি করে ক্লায়েন্টের কাছে প্রস্তাবনা পাঠান। এতে আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে কেন আপনি কাজের জন্য সেরা তা বোঝান।
পেশাদার নেটওয়ার্ক তৈরি করুন: অন্যান্য ফ্রিল্যান্সার এবং পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন। নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে আপনি নিজেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
ক্লায়েন্টের প্রত্যাশার বাইরে ডেলিভারি দিন: ক্লায়েন্টের চাহিদার বাইরে গিয়ে আরও উন্নত কাজ করার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, ১২০০ শব্দের একটি ব্লগের পরিবর্তে ১৫০০ শব্দে মানসম্মত লেখা তৈরি করুন এবং যথাসময়ে জমা দিন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে ধৈর্য, দক্ষতা এবং পেশাদার মনোভাব অপরিহার্য। উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করে এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা মেটাতে নিজের সেরাটা দিতে পারলে আপনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যেসব বিষয়গুলো সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর সম্পর্কে ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি এখন আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যেসব বিষয়গুলো সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা এবং মানা অত্যন্ত জরুরি। 

একজন দক্ষ এবং পেশাদার ফ্রিল্যান্সার হতে হলে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে। এগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে সফল এবং সমৃদ্ধ করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার প্রধান বিষয়সমূহ

  • দক্ষতা অর্জন: কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ডেটা এন্ট্রি বা প্রোগ্রামিংয়ের মতো কাজের ক্ষেত্রে আপনি যদি দক্ষ হন, তাহলে সহজেই ভালো কাজের সুযোগ পাবেন।
  • ক্লায়েন্টের চাহিদা বোঝা: ক্লায়েন্ট কী চায়, তাদের প্রকল্পের উদ্দেশ্য এবং কাজের লক্ষ্য সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝা অত্যন্ত প্রয়োজন। কাজ শুরুর আগে স্পষ্ট নির্দেশনা এবং প্রয়োজনীয়তাগুলি নিশ্চিত করতে হবে।
  • যোগাযোগ দক্ষতা: ভালো যোগাযোগ দক্ষতা ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার মূল চাবিকাঠি। ক্লায়েন্টের সঙ্গে পেশাদার এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো উত্তর দেওয়া এবং কাজের অগ্রগতি জানানো এই দক্ষতার অংশ।
  • সময় ব্যবস্থাপনা: ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজের সময়সীমা মেনে চলা অপরিহার্য। একটি কাজ সঠিক সময়ে শেষ করতে না পারলে ভবিষ্যতে ক্লায়েন্ট হারানোর ঝুঁকি থাকে। তাই কাজের সময়সূচি তৈরি করে সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা জরুরি।
  • গুণগত মান বজায় রাখা: ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে মান বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের কাজ ক্লায়েন্টদের সন্তুষ্ট করে এবং ভবিষ্যতে নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে।
  • বিশ্বস্ততা: ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজের গোপনীয়তা বজায় রাখা এবং ক্লায়েন্টের সঙ্গে পেশাদার আচরণ বজায় রাখা অপরিহার্য।
  • নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি: বেশি সংখ্যক ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে এবং পোর্টফোলিও তৈরি করে নিজের পরিচিতি বাড়ানো একটি কার্যকর কৌশল। সোশ্যাল মিডিয়া, ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, এবং পেশাদার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হওয়া এই ক্ষেত্রে সহায়ক।
  • নিয়মিত শেখা: ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগৎ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার শিখে নিজেকে আপডেট রাখা জরুরি।
  • নিজের পোর্টফোলিও তৈরি: একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরি করা ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ পাওয়ার প্রথম ধাপ। এটি ক্লায়েন্টকে আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
  • আত্মনিয়ন্ত্রণ: ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বাধীন পেশা, তাই নিজেকে আত্মনিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া অপরিহার্য।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে এই বিষয়গুলো মেনে চলা এবং নিজেকে প্রতিনিয়ত উন্নত করার জন্য কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু আয়ের পথ নয় বরং নিজেকে দক্ষ পেশাদারে পরিণত করার একটি বড় সুযোগ।

ফ্রিল্যান্সারদের টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সবচাইতে বড় মাধ্যম কোনটি 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর সম্পর্কে জানলাম কিভাবে আমরা ফ্রিল্যান্সিং করে ভাল অর্থ উপার্জন করব সেটার সম্পর্কেও জানলাম কিন্তু সেই অর্থ কিভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিব সেটা জানাও জরুরি।


২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য টাকা পাওয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে Payoneer, PayPal, Wish, Bank Deposit, Skrill এবং WebMoney। এর মধ্যে Payoneer ফ্রিল্যান্সারদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম হিসেবে স্বীকৃত।

এর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফ্রিল্যান্সারদের সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট গ্রহণের সুযোগ। Payoneer ব্যবহারকারীদের একটি প্রি-পেইড ডেবিট কার্ড সরবরাহ করে যা Mastercard বা Visa নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন এবং পেমেন্ট করার সুবিধা দেয়। 

এটির মাধ্যমে অনলাইন শপিং, ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে সরাসরি পেমেন্ট গ্রহণ এবং স্থানীয় মুদ্রায় টাকা উত্তোলন করা সম্ভব।

Payoneer-এর আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:
  • বৈশ্বিক লেনদেনের সুবিধা: ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন এবং স্থানীয় মুদ্রায় তা উত্তোলন করতে পারেন।
  • নিরাপদ এবং সহজ পদ্ধতি: Payoneer নিরাপদ পেমেন্ট প্রক্রিয়ার জন্য বিখ্যাত এবং এর ব্যবহার অত্যন্ত সহজ।
  • বাজারপ্লেস ইন্টিগ্রেশন: Fiverr, Upwork এবং Amazon-এর মতো জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো Payoneer-এর সঙ্গে সরাসরি ইন্টিগ্রেটেড।
  • কম খরচে লেনদেন: অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেমের তুলনায় Payoneer-এর লেনদেন খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
  • বিল পেমেন্ট: ব্যবহারকারীরা তাদের Payoneer অ্যাকাউন্ট থেকে সহজেই বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ করতে পারেন।
তাছাড়া, Payoneer ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেয় যেমন নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য সাইন-আপ বোনাস এবং প্রোফেশনাল ট্রান্সফার সার্ভিস। এই সকল সুবিধা ফ্রিল্যান্সারদের Payoneer-কে পছন্দ করার মূল কারণ।

PayPal এবং Skrill-এর মতো অন্যান্য মাধ্যমও জনপ্রিয় তবে PayPal-এর সীমাবদ্ধ কার্যক্রম এবং Skrill-এর তুলনামূলক বেশি চার্জ অনেক ফ্রিল্যান্সারকে Payoneer-এর দিকে আকৃষ্ট করে। Payoneer-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশ আরও সহজ হয়েছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ সবচেয়ে বেশি আয় প্রদান করে

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর যেখান থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করতে পারবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করব। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলোতে আয়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। এখানে এসব কাজের চাহিদা এবং আয়ের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হলো, 

ডেটা অ্যানালিটিক্স

ডেটা অ্যানালিটিক্স সেক্টরটি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৩ সালের মধ্যে এ খাতের বৈশ্বিক বাজার মূল্য ২৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে ডেটা অ্যানালিটিক্সের দক্ষতা অর্জন করেন, তারা ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে বড় প্রকল্প পেয়ে উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারেন। 

ডেটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদনের কাজ এই পেশায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য উচ্চ দক্ষতা প্রয়োজন।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট পেশায় কাজের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭৯২৫ থেকে ১২৩২৯টি নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ, যেমন ইমেল ম্যানেজমেন্ট, ডেটা এন্ট্রি, ক্যালেন্ডার ম্যানেজমেন্ট এবং গ্রাহক সহায়তার কাজ করেন। 

এই কাজগুলো নির্দিষ্ট প্রকল্প বা ঘন্টা ভিত্তিক বেতনে সম্পন্ন করা হয় যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও লাভজনক হয়ে উঠছে।

মাইক্রোসফট অফিস এবং এক্সেল

মাইক্রোসফট অফিস, বিশেষত এক্সেলের দক্ষতা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সময় এবং অর্থ সাশ্রয়ী করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যেখানে ২০ ঘণ্টার কাজ দক্ষতার মাধ্যমে মাত্র ১ ঘণ্টায় সম্পন্ন করা সম্ভব, সেখানে একই সময়ে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়। 

এক্সেল সম্পর্কিত কাজ, যেমন ডেটা মডেলিং, অটোমেশন এবং বিশ্লেষণ, ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন এবং লাভজনক।

কপিরাইটিং

কপিরাইটিং হলো ফ্রিল্যান্সিংয়ের শীর্ষ জনপ্রিয় কাজগুলোর একটি। বর্তমানে এ খাতে চাহিদা ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কপিরাইটিং করতে পারেন তারা বিভিন্ন পণ্যের বর্ণনা, ব্লগ পোস্ট এবং বিপণন সামগ্রী লিখে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারেন। এই কাজের জন্য সৃজনশীলতা এবং লিখনশৈলীর দক্ষতা অত্যন্ত জরুরি।

ট্রান্সক্রিপশন 

ট্রান্সক্রিপশন কাজ, অর্থাৎ অডিও বা ভিডিও ফাইল থেকে লিখিত ডকুমেন্ট তৈরি, ফ্রিল্যান্সিংয়ের আরেকটি লাভজনক ক্ষেত্র। ভাষাগত দক্ষতা থাকা ফ্রিল্যান্সাররা আরবি, রুশ, ফরাসি এবং অন্যান্য ভাষায় কাজ করে ভালো আয় করতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই খাতের চাহিদা ৫২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা এই কাজে দক্ষ, তারা কম সময়ে বেশি আয়ের সুযোগ পান।

অন্যান্য সম্ভাবনা

বই লেখার কাজ, ব্লগ লেখা, অনুবাদ এবং ভিডিও এডিটিংয়ের মতো সৃজনশীল কাজগুলোও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দেয়। বিশেষ করে, যারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন এবং নিজেদের দক্ষতা ক্রমাগত উন্নত করেন, তাদের আয়ের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার টিপস

  • নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়ার চেষ্টা করুন।
  • জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম, যেমন Upwork, Fiverr, এবং Freelancer-এ সক্রিয় থাকুন।
  • ক্লায়েন্টদের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক তৈরি করুন।
  • নতুন দক্ষতা শেখার জন্য সময় দিন, যেমন প্রোগ্রামিং, ডিজাইনিং বা ভিডিও এডিটিং।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে সঠিক দক্ষতা অর্জন এবং বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা অপরিহার্য।

২০২৪ সালে ফ্রিল্যান্সিং এ যে কাজের চাহিদা বেশি

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফলভাবে বেশি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে চাইলে প্রথমে আপনাকে এই পেশার সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মৌলিক ধারণা এবং কাজের ধরন সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিজ দক্ষতা বাড়িয়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। 

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যত বেশি জ্ঞান থাকবে, ততই আপনি দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ শুরু করতে পারবেন।

আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত কাজ বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে যেসব কাজ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে বেশি চাহিদাপূর্ণ, সেগুলো হলো:
  • ডেটা এন্ট্রি: সহজ এবং প্রবেশমূলক কাজ যা দক্ষতার পাশাপাশি দ্রুত টাইপিংয়ের ক্ষমতা প্রয়োজন।
  • অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট: মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির দক্ষতা থাকলে এই সেক্টরে আয় করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
  • ভিডিও এডিটিং: ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিজ্ঞাপনের জন্য ভিডিও এডিটিংয়ের চাহিদা বাড়ছে।
  • ভয়েস ওভার: ভাল কণ্ঠ এবং ভাষাগত দক্ষতা থাকলে ভয়েস ওভারের কাজ করে আয় করা সম্ভব।
  • কনটেন্ট রাইটিং: ব্লগ, আর্টিকেল এবং ওয়েবসাইটের জন্য মানসম্মত কনটেন্ট রাইটিং সেবার প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে।
  • ওয়েব ডিজাইন: ওয়েবসাইট তৈরি এবং ডিজাইন করা একটি অত্যন্ত লাভজনক কাজ।
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন: লোগো, ব্যানার এবং ব্র্যান্ডিং ম্যাটেরিয়াল ডিজাইনের কাজের জন্য দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদা অনেক বেশি।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং এবং SEO-এর মতো ডিজিটাল মার্কেটিং দক্ষতার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা ভালো আয় করতে পারেন।
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইট তৈরি এবং এর কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অত্যন্ত জনপ্রিয়।
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট: বিভিন্ন ব্যবসা ও ব্র্যান্ডের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করার চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে।

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং এর সঙ্গে ক্লায়েন্ট ও কাজের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য Upwork, Fiverr এবং Freelancer-এর মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ক্লায়েন্টদের জন্য সরাসরি কাজ করে আয় করার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার জন্য টিপস

  • নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ বেছে নিন।
  • নির্ভুল এবং পেশাদারভাবে কাজ সম্পন্ন করুন।
  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল তৈরি করে নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করুন।
  • নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার শিখে নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলুন।
ফ্রিল্যান্সিং শুধু আয়ের পথ নয় বরং এটি উদ্যোক্তা হয়ে উঠারও এক বড় সুযোগ। সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে আপনি এই পেশায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারেন।

আউটসোর্সিং করতে কোন বিষয়গুলো জানা জরুরি

ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং এর গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর এর ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং এর যেসব বিষয়গুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। আউটসোর্সিং হল একটি দক্ষতার ক্ষেত্র যেখানে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কোম্পানির কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে আয় করা যায়। 

এই কাজগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা এবং মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজন। আউটসোর্সিংয়ের জগতে সফলতা অর্জন করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

আউটসোর্সিংয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো

  • নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন: আপনি যে ক্ষেত্রে কাজ করতে চান, সেই বিষয়ে গভীর দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হবে। এটি হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, বা ট্রান্সক্রিপশন। সঠিক দক্ষতা না থাকলে আপনি ক্লায়েন্টের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন না।
  • জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ও প্ল্যাটফর্মের ধারণা: ২০২৪ সালে জনপ্রিয় আউটসোর্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে Fiverr, Upwork, Freelancer, এবং Toptal অন্যতম। এসব প্ল্যাটফর্মে কাজ করার জন্য প্রোফাইল তৈরি করা, সঠিকভাবে আবেদন করা এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী সেবা প্রদান করা জরুরি।
  • সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা: ক্লায়েন্টদের দেওয়া কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো এবং নিখুঁতভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারলে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ভালো রিভিউ ও রেটিং পাওয়া যায়, যা ভবিষ্যতে আরও কাজ পেতে সহায়ক হয়।
  • ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝতে পারা: কাজ শুরুর আগে ক্লায়েন্টের চাহিদা স্পষ্টভাবে বোঝা এবং তার অনুযায়ী কাজ করা জরুরি। ক্লায়েন্টের সন্তুষ্টি আউটসোর্সিংয়ের সফলতার চাবিকাঠি।
  • যোগাযোগ দক্ষতা: আউটসোর্সিংয়ে ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগ দক্ষতা থাকা অপরিহার্য। এটি ক্লায়েন্টের সঙ্গে পরিষ্কারভাবে আলোচনা করতে এবং কাজের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে সহায়তা করে।
  • প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা: একাধিক প্রকল্প পরিচালনা, সময় ব্যবস্থাপনা, এবং কাজের অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুল (যেমন Trello, Asana) ব্যবহারে দক্ষতা থাকা দরকার।
  • কাজের গুণমান নিশ্চিত করা: নিখুঁত এবং মানসম্পন্ন কাজ ক্লায়েন্টদের আস্থা অর্জনে সহায়ক। ক্লায়েন্টের এপ্রুভাল পাওয়ার পরেই পারিশ্রমিক নিশ্চিত হয়, তাই কাজের গুণমানের প্রতি সর্বদা মনোযোগ দিতে হবে।
  • পেমেন্ট প্রসেস সম্পর্কে জ্ঞান: Payoneer, PayPal, এবং Skrill-এর মতো পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন। এটি সঠিকভাবে পারিশ্রমিক গ্রহণে সহায়ক।

আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • আপনার কাজের একটি পোর্টফোলিও প্রস্তুত করুন এবং এটি ক্লায়েন্টের সামনে উপস্থাপন করুন।
  • নিয়মিত আপডেট থাকুন এবং নতুন টুল বা প্রযুক্তি শিখুন।
  • ক্লায়েন্টদের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখুন এবং ভালো রিভিউ অর্জনের চেষ্টা করুন।
আউটসোর্সিংয়ের জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে নির্ধারিত সময়ে গুণগত মান বজায় রেখে কাজ করা এবং ক্লায়েন্টদের আস্থাভাজন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কৌশল ও দক্ষতার সমন্বয়ে আউটসোর্সিং একটি লাভজনক এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যেখানে ২০টি শীর্ষ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। স্বল্প পরিশ্রম ও সঠিক দক্ষতা ব্যবহার করে এখানে সহজেই সফলতা অর্জন সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সফল হতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা এবং মনোযোগ সহকারে কাজ শেখা অত্যন্ত জরুরি। 

আজকের পোস্টটি আপনাদের কতটুকু উপকারে আসলো তা আমাকে জানান এবং কোন কমেন্ট থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান, ধন্যবাদ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url