কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু জানেন না কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়। এ বিষয়ে জানা থাকলে আপনি সহজেই আপনার ঘুমের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আপনার সমস্যার সমাধানের জন্যই আজকের আলোচনা আপনার জন্য কার্যকর।

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়


একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে ঘুমের বিকল্প নাই তাই কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় এ বিষয়ে জেনে নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করব এবং দ্রুত মূল আলোচনায় চলে যাব। 

ঘুম কম হওয়ার কারণ ও লক্ষণ

মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ঘুম। পূর্ণবয়স্ক, শিশু ও নবজাতকের জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয় সময় ভিন্ন হলেও, সকলেরই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, টক্সিন বের করে দেয় এবং পরবর্তী দিনের শক্তি ও দক্ষতা ধরে

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

রাখতে সহায়তা করে তবে ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা হলে রাতে ঘুম না আসা বা ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় যা দিনের বেলায় ক্লান্তি, মনোযোগের ঘাটতি এবং খিটখিটে মেজাজের কারণ হয়। 

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের পরিমাণ কমলেও, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তির কারণে তরুণদের মাঝেও অনিদ্রা বাড়ছে। অধ্যাপক ওয়াকার তাঁর 'হোয়াই উই স্লিপ' বইয়ে বলেছেন, পৃথিবীর বড় একটা অংশ রাতে ঘুম না দিয়ে সময় নষ্ট করে এবং যে ঘুম হারিয়ে যাচ্ছে তা যে পূরণ করা জরুরি, সে বিষয়ে তারা সচেতন নয়।

ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ব্যপারটা সবসময় এমন নয় অন্যান্য আরও কারণ আছে যা নিচে উল্লেখ করা হল, 

আপনার পছন্দ হতে পারেঃ



মানসিক চাপ ও উদ্বেগ

চাকরি, পরীক্ষা, সম্পর্কের সমস্যা বা প্রিয়জনের মৃত্যু ইত্যাদি মানসিক চাপ অনিদ্রার অন্যতম প্রধান কারণ। চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে মস্তিষ্ক শান্ত হতে পারে না, ফলে ঘুম আসতে দেরি হয় বা ঘুম বারবার ভেঙে যায়। ​

অনিয়মিত ঘুমের রুটিন

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে না যাওয়া, শিফট পরিবর্তন, রাত জেগে মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করা ইত্যাদি ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে এতে ঘুম আসতে সমস্যা হয় এবং ঘুমের মান কমে যায়। ​

শারীরিক অসুস্থতা

ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হাঁপানি, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, হাইপারথাইরয়েডিজম ইত্যাদি শারীরিক রোগ অনিদ্রার কারণ হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা অস্বস্তিও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ​

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা

বিষণ্নতা, উদ্বেগ, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, স্কিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি মানসিক রোগে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগগুলোর কারণে ঘুম আসতে দেরি হয় বা ঘুম গভীর হয় না। ​

ওষুধ ও রাসায়নিক পদার্থ

কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, ডিকনজেস্ট্যান্ট, বিটা-ব্লকার, থিওফিলিন ইত্যাদি ঘুমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া ক্যাফেইন, নিকোটিন ও অ্যালকোহল অতিরিক্ত গ্রহণ করলেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ​

অস্বাস্থ্যকর ঘুমের পরিবেশ

ঘুমানোর ঘরে অতিরিক্ত আলো, শব্দ, অস্বস্তিকর তাপমাত্রা বা অগোছালো পরিবেশ ঘুমের মান কমিয়ে দেয়। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর বিছানা বা বালিশও অনিদ্রার কারণ হতে পারে। ​

বয়স ও হরমোনজনিত পরিবর্তন

বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুমের পরিমাণ কমে যায় এবং ঘুম পাতলা হয়ে যায়। মেনোপজ বা মাসিক চক্রের পরিবর্তনের সময় হরমোনের ওঠানামা ঘুমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়?

সব বয়সের মানুষের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে শরীরে নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, প্রযুক্তি আসক্তি আর মানসিক চাপের পাশাপাশি ভিটামিনের ঘাটতি অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘুমের সমস্যার।

বিশেষ করে ভিটামিন ডি, বি-৬, বি-১২, সি এবং ই-এর অভাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, ঘুমের মান কমে যায় এবং অনিদ্রা দেখা দেয় তাই সুস্থ জীবন এবং ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ভিটামিন ডি (Vitamin D)

ভিটামিন ডি ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে এর অভাবে অনিদ্রা, ক্লান্তি ও ঘুমের ব্যাঘাত দেখা দিতে পারে। সূর্যের আলো, সামুদ্রিক মাছ, ডিম, দুধ ও কমলার রস ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। ​

ভিটামিন বি-১২ (Vitamin B12)

মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতার জন্য ভিটামিন বি-১২ গুরুত্বপূর্ণ এর অভাবে ঘুমের সমস্যা তৈরি হতে পারে। প্রাণিজ প্রোটিন, দুধ, ডিম ও চিজ ভিটামিন বি-১২-এর চমৎকার উৎস। ​

ভিটামিন বি-৬ (Vitamin B6)

ভিটামিন বি-৬ সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদনে সহায়তা করে যা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। কলা, গাজর, পালং শাক, আলু, ডিম, চিজ, মাছ ও গোটা শস্যদানা ভিটামিন বি-৬-এর ভালো উৎস। ​

ভিটামিন সি (Vitamin C)

ভিটামিন সি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পারে। সাইট্রাস ফল যেমন কমলা ও লেবু, পালং শাক, ফুলকপি, আমলকী ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ​

ভিটামিন ই (Vitamin E)

ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের সুস্থতা বজায় রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন ই-এর অভাবে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পালং শাক, ব্রকলি ও টমেটো খেলে সহজেই এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করা যায়।

ঘুম কম হলে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়

​ঘুম আমাদের শরীরের সুস্থতা ও মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মনের উপর বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা আমরা জানলাম এখন আমরা জানব ঘুম কম হলে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় সে সম্বন্ধে। 

মানসিক স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা

  • বিষণ্নতা ও উদ্বেগ: ঘুমের অভাবে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়, যা বিষণ্নতা ও উদ্বেগের ঝুঁকি বাড়ায়। ​
  • স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগে ঘাটতি: ঘুম কম হলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস পায়, ফলে স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগে সমস্যা দেখা দেয়। ​

হৃদ্‌রোগ ও রক্তচাপ

  • উচ্চ রক্তচাপ: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। ​
  • হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি: ঘুমের ঘাটতি হৃদ্‌রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। ​

বিপাকীয় সমস্যা ও ওজন বৃদ্ধি

  • ডায়াবেটিস: ঘুমের অভাবে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা হ্রাস পায়, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ​
  • স্থূলতা: ঘুম কম হলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া ও ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। ​

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস

  • ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ​

দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি

  • আলঝেইমারস ও ডিমেনশিয়া: দীর্ঘমেয়াদি ঘুমের ঘাটতি স্মৃতিভ্রংশ ও আলঝেইমারস রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ​

দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি

  • দুর্ঘটনার সম্ভাবনা: ঘুমের অভাবে মনোযোগ ও প্রতিক্রিয়া সময় হ্রাস পায়, যা সড়ক দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। ​

কোন খাবারে আছে ঘুম বাড়ানোর ভিটামিন

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় বা কোন খাবারে আছে ঘুম বাড়ানোর ভিটামিন? এ দুইটা কথা একে অপরের পরিপূরক। আমাদের যেমন জানতে হবে কোন খাবারে আছে ঘুম বাড়ানোর ভিটামিন
তেমনি জানতে হবে সেসব ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে কোন খাবার খেতে হবে। 

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

​ঘুমের মান উন্নত করতে কিছু নির্দিষ্ট ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিনসমূহ স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতে, মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। 

নিচে ঘুম বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও সেগুলোর উৎস হিসেবে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো,

ভিটামিন ডি (Vitamin D)

ভিটামিন ডি ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ​ভিটামিন ডি এর উৎসগুলো হল, 
  • ফ্যাটি ফিশ: স্যামন, ম্যাকেরেল, ট্রাউট
  • ডিমের কুসুম
  • গরুর কলিজা
  • ফর্টিফাইড খাবার: দুধ, কমলার রস, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল ​

ভিটামিন বি-৬ (Vitamin B6)

ভিটামিন বি-৬ সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদনে সহায়তা করে যা ঘুমের মান উন্নত করে। ​​ভিটামিন বি-৬ এর উৎসগুলো হল, 
  • মাছ: স্যামন, টুনা
  • ডিম
  • কলা
  • ছোলা
  • অ্যাভোকাডো ​

ভিটামিন বি-১২ (Vitamin B12)

ভিটামিন বি-১২ স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ঘুমের মান উন্নত করে। ​​​ভিটামিন বি-১২ এর উৎসগুলো হল,
  • গরুর কলিজা
  • ক্ল্যামস
  • স্যামন, ট্রাউট, টুনা
  • ফর্টিফাইড সিরিয়াল ​

 ভিটামিন সি (Vitamin C)

ভিটামিন সি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ঘুমের মান উন্নত করে।  ভিটামিন সি এর উৎসগুলো হল,
  • কমলা, লেবু, আঙুর
  • কিউই, স্টার ফল
  • ব্রোকলি, পেঁপে ​

ভিটামিন ই (Vitamin E)

ভিটামিন ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা কোষের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ঘুমের মান উন্নত করে। ​ভিটামিন ই এর উৎসগুলো হল,
  • গমের তেল
  • বাদাম: আমন্ড, সূর্যমুখী বীজ
  • অ্যাভোকাডো, পেঁপে
  • সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, কলার্ড গ্রিনস ​
ঘুমের মান উন্নত করতে ভিটামিন ডি, বি-৬, বি-১২, সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এই ভিটামিনসমূহ স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতে, হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে যা ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে সহায়ক।

ঘুম বাড়ানোর ৫টি প্রাকৃতিক উপায়

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা জেনে আমাদের জেনে নিতে হবে ঘুম বাড়ানোর ৫টি প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে। ভালো ঘুমের জন্য প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করা অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। নিচে ঘুম বাড়ানোর পাঁচটি প্রাকৃতিক উপায় তুলে ধরা হলো, 

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম বিশেষ করে সকালের দিকে ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। ব্যায়াম মেলাটোনিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়ায় যা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ।​

ঘুমের রুটিন মেনে চলুন

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং উঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি শরীরের সার্কাডিয়ান রিদম স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে ফলে সহজে ঘুম আসে ।​

ঘুমের আগে উষ্ণ গরম পানিতে গোসল

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করলে শরীর শিথিল হয় এবং ঘুম আসতে সুবিধা হয় ।​

ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

ধ্যান ও গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে যা ঘুম আসতে সহায়ক ।​

ঘুমের আগে হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ

ঘুমের আগে বাদাম, দই, কলা, মধু বা মিষ্টি আলু খাওয়া যেতে পারে। এই খাবারগুলো মেলাটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে যা ঘুমের মান উন্নত করে ।​

এই প্রাকৃতিক উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনি ঘুমের মান উন্নত করতে পারেন তবে যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ঘুম কম হওয়ার জন্য দায়ী আরও কারণ

ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রা (Insomnia) একটি সাধারণ ঘুমের ব্যাধি, যা বিভিন্ন কারণের ফলে হতে পারে। আমরা কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা জানলাম এখন ঘুম কম হওয়ার জন্য দায়ী প্রধান কারণগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:​ 

মানসিক ও মানসিক স্বাস্থ্যজনিত কারণ

  • চাপ ও উদ্বেগ: কাজ, পরিবার, অর্থনৈতিক সমস্যা বা স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ।​
  • বিষণ্নতা ও অন্যান্য মানসিক ব্যাধি: বিষণ্নতা, উদ্বেগ, বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) ঘুমের সমস্যার সাথে সম্পর্কিত ।​

শারীরিক ও স্বাস্থ্যজনিত কারণ

  • দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: আর্থ্রাইটিস, পিঠের ব্যথা বা ফাইব্রোমায়ালজিয়া ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ।​
  • নিউরোলজিক্যাল সমস্যা: পারকিনসনস ডিজিজ, এপিলেপসি, স্ট্রোক এবং ডিমেনশিয়া ঘুমের চক্রে প্রভাব ফেলতে পারে ।​
  • স্লিপ অ্যাপনিয়া ও রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম: এই ধরনের ঘুমের ব্যাধিগুলো ঘুমের মান কমিয়ে দিতে পারে ।​

জীবনযাত্রা ও অভ্যাসজনিত কারণ

  • অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচী: প্রায়ই ঘুমের সময় পরিবর্তন, রাতের শিফটে কাজ করা বা জেট ল্যাগ ঘুমের চক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ।​
  • ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও নিকোটিন গ্রহণ: এই পদার্থগুলো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, বিশেষ করে যদি ঘুমের আগে গ্রহণ করা হয় ।​
  • ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার: ঘুমের আগে মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটার ব্যবহার ঘুমের মান কমিয়ে দিতে পারে ।​

হরমোন ও নারীদের স্বাস্থ্যজনিত কারণ

  • হরমোন পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, ঋতুচক্র ও মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে ।​

ওষুধ ও অন্যান্য কারণ

  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডিপ্রেশন বা অ্যালার্জির ওষুধ ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ।​
  • অসুস্থতা বা ব্যথা: শরীরের ব্যথা বা অসুস্থতা ঘুমের মান কমিয়ে দিতে পারে ।​
ঘুমের সমস্যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যা মানসিক, শারীরিক, জীবনযাত্রা বা ওষুধজনিত হতে পারে। এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করলে ঘুমের মান উন্নত করা সম্ভব। ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শেষ কথা 

আশা করি মানুষের মনের সাধারণ প্রশ্ন কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা বিস্তারিত জানাতে সক্ষম হয়েছি। এরপরেও যদি আরও কিছু জানতে চান কমেন্ট করে পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url